সংবাদদাতা, ইসলামপুর: ডালখোলাকে কেন্দ্র করে রমরমিয়ে চলছে কাফ সিরাপের অবৈধ কারবার। বিহার লাগোয়া হওয়ায় আন্তঃরাজ্য পাচার চক্রের সক্রিয়তায় বিহার থেকে প্রচুর পরিমাণ কাফ সিরাপ ঢুকছে বলে অনুমান পুলিস আধিকারিকদের। কার্যত ডালখোলাকে করিডর হিসেবে ব্যবহার করে চলছে চক্রের কারবার। তবে রুট নিয়ে ধোঁয়াশায় আছেন পুলিস আধিকারিকরা। জেলা পুলিসের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট কোনও রুট নেই। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রুট দিয়ে ঢুকছে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, ডালখোলা থানা এলাকার সঙ্গে বিহারের তিনটি থানার সীমানা যুক্ত। বাইসি, তেলতা ও বলরামপুর থানা লাগোয়া। বিহারের পূর্ণিয়া থেকে ওই তিন থানা এলাকার বিভিন্ন রুট দিয়ে ডালখোলায় কাফ সিরাপ ঢুকছে। বাইসি হয়ে পূর্ণিয়ামোড় দিয়ে কাফ সিরাপ ঢোকার একটি রুট হতে পারে। অন্যদিকে, ডালখোলার মিঠাপুর, মল্লিকপুর ও ফরসরা রোড তেলতা থানা এলাকার সঙ্গে যুক্ত। ওই রোডগুলিও পাচারকারীরা ব্যবহার করছে বলে জানা গিয়েছে। বলরামপুর থানা লাগোয়া রানিগঞ্জ, দক্ষিণ পাতনোর এলাকায় হামেশাই মানুষজন বাংলা-বিহার যাওয়া আসা করছে। দুষ্কৃতীরা ওই রোড ব্যবহার করে দক্ষিণ পাতনোর সীমান্ত এলাকায় মজুত করছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ডালখোলার বিধানপল্লি সব্জি মার্কেট থেকে পুলিস একটি সরকারি বোর্ড ও নীলবাতি লাগানো গাড়ি থেকে ২০০ বোতল কাফ সিরাপ উদ্ধার করে। গাড়ির চালক তথা মালিক দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমণ্ডি থানা এলাকার বাসিন্দা। পুলিসের অনুমান, উদ্ধার হওয়া কাফ সিরাপ দক্ষিণ দিনাজপুর হয়ে বাংলাদেশে পাচারের উদ্দেশ্য ছিল কারবারিদের।
এছাড়া গত এপ্রিলে ডালখোলার দক্ষিণ পাতনোর এলাকার একটি চায়ের দোকানে অভিযান চালায় পুলিস। সেবার চায়ের দোকান থেকে ৬৩৭ বোতল কাফ সিরাপ উদ্ধার হয়েছিল। ওই ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তারও করে পুলিস। ওই এলাকাতেই আরও একটি অভিযানে বাড়িতে মজুত প্রচুর কাফ সিরাপ উদ্ধার হয়।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু কাফ সিরাপ স্থানীয় এলাকায় বিক্রি হয়। নেশা করার জন্য একশ্রেণির মানুষ মদের পরিবর্তে কাফ সিরাপ কেনে। বিহার থেকে এনে কারবারিরা গোপন ডেরায় মজুত করে। সেখান থেকে চাহিদা অনুসারে বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়।
ইসলামপুর পুলিস জেলার অতিরিক্ত সুপার ডেন্ডুপ শেরপা বলেন, এই অবৈধ কারবারে যুক্ত কারবারিরা কিছু ক্ষেত্রে বিহার থেকে ঢুকছে। আবার এখান থেকে বিহারেও যাচ্ছে। পুলিস, প্রশাসন সচেতন আছে। মাদক কারবার রুখতে আমাদের লাগাতার অভিযান চলছে।