সংবাদদাতা, শীতলকুচি: বিয়েবাড়ি থেকে ফেরা হল না, পথে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল পাঁচ মাস আগে বিয়ে হওয়া বধূর। গুরুতর জখম হয়েছেন মৃতার স্বামী সহ চারজন। শনিবার রাতে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে শীতলকুচি ব্লকের বড়কৈমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের শিবপুর চৌপাথি সংলগ্ন এলাকায়। পুলিস জানিয়েছে, মৃতার নাম দিয়া তিরকি দাস (২৪)। জখম প্রত্যেকের বাড়ি শীতলকুচি।
মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে একটি ছোট চার চাকা গাড়িতে ঘোকসাডাঙা থানার অন্তর্গত শিলডাঙার গোডাউন এলাকায় এক আত্মীয়ের বিয়েবাড়িতে গিয়েছিলেন তাঁরা। গভীর রাতে সেখান থেকে ফেরার পথে মাথাভাঙা-শীতলকুচি রাজ্য সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। মূল রাস্তা থেকে ছিটকে যায় গাড়িটি। এতে দুমড়েমুচড়ে যায় গাড়ির পিছন ও সামনের অংশ। মাঝরাতে ভয়াবহ আওয়াজে ঘুম ভাঙে স্থানীয়দের। পরে পৌঁছয় শীতলকুচি থানার পুলিস। জখমদের উদ্ধার করে মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিস দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাথাভাঙা মর্গে পাঠায়।
এদিকে, দুর্ঘটনায় মৃতার স্বামী চঞ্চল দাস, ননদ জ্যোতিকা দাস, দেওর রিজু দাস এবং গাড়ির চালক গুরুতর জখম হন। তাঁরা প্রত্যেকে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। কী করে এতবড় দুর্ঘটনা ঘটল সেই বিষয়টি স্পষ্ট নয়। তবে প্রাথমিকভাবে পুলিসের অনুমান, দ্রুত গতিতে ছোটায় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তা থেকে ছিটকে গিয়ে ঘটনাটি ঘটতে পারে।
শীতলকুচি-মাথাভাঙা রাজ্য সড়কে একেরপর এক দুর্ঘটনা নিয়ে উদ্বিগ্ন বাসিন্দারা। এদিকে, দুর্ঘটনা রুখতে পুলিসের তরফে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হলেও দুর্ঘটনার সংখ্যা কমছে না। চলতি বছরেই দুর্ঘটনায় একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সংশ্লিষ্ট সড়কে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই সড়কটি প্রায় দেড় বছর আগে সংস্কার করা হয়েছিল। কিন্তু রাস্তাটি চাওড়া হয়নি। ঝাঁ চকচকে রাস্তায় দ্রুত গতিতে ছুটে চলে গাড়িগুলি। সংকীর্ণ রাস্তা হওয়ায় ওভারটেক কিংবা সামনে চলে আসা গাড়িকে সাইড দিতে গিয়ে মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনা ঘটছে।
অপরদিকে, নববধূর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পাঁচমাস আগে শীতলকুচির চঞ্চল দাসের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল দিয়ার। শীতলকুচি-সিতাই সড়কের পাশে একটি রেস্টুরেন্ট চালান চঞ্চল। দিয়ার মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না তাঁর পরিবার। মৃতার কাকাশ্বশুর সুজিত দাস বলেন, রাত ৮টা নাগাদ বিয়েবাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন তাঁরা। রাত ৩টে নাগাদ ফোনে দুর্ঘটনার বিষয়টি জানতে পারি। কীকারণে দুর্ঘটনা ঘটল তা বুঝে উঠতে পারছি না। শীতলকুচি থানার ওসি অ্যান্থনি হোড়ো জানান, রাতেই পুলিস ঘটাস্থলে পৌঁছয়। গাড়িটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।