• শহরের ভাড়াটেদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহে উদ্যোগী পুরুলিয়া পুরসভা
    বর্তমান | ২৬ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: ভাড়াটিয়া সম্পর্কে কোনওরকম তথ্য না থাকায় বিভিন্ন অপরাধের কিনারা করতে বেগ পেতে হচ্ছে পুলিসকে। তাই ভাড়াটিয়াদের তথ্য জোগাড়ে উদ্যোগ নেওয়ার কথা ভাবছে পুরুলিয়া পুরসভা। 

    দেখা গিয়েছে, অপরাধীরা প্রথমে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে। তারপর অপরাধ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। রাজ্যের সর্বত্রই এই ঘটনা ঘটছে। বহু বছর আগে রঘুনাথপুর শহরের ব্লকডাঙা এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে হানা দিয়ে পুলিসের চক্ষু চড়কগাছ হয়ে গিয়েছিল। দেখা যায়, ভাড়াবাড়িতে রমরমিয়ে চলছে অস্ত্র কারখানা। রীতিমতো লেদ মেশিন বসিয়ে অস্ত্রের খোল তৈরি করছিল ঝাড়খণ্ডের দুষ্কৃতীরা। তারপর থেকে জেলার পুরসভাগুলিতে ভাড়াটেদের সম্পর্কে তথ্য জোগাড় শুরু হয়েছিল। কিন্তু তারপর সেই উদ্যোগ ধামাচাপা পড়ে যায়। ফের নতুন করে এ ব্যাপারে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে পুর কর্তৃপক্ষ। পুর চেয়ারম্যান নব্যেন্দু মাহালি বলেন, আমরা শহরের বিভিন্ন মেসে একবার সার্ভে করে সেই সম্পর্কিত তথ্য জোগাড় করেছিলাম। কিন্তু ভাড়াটিয়াদের তথ্য পুরসভার কাছে নেই। শহরের কোথায় কোন বাড়িতে কে বা কারা থাকছে, তার বিস্তারিত তথ্য অবশ্যই থাকা দরকার। কীভাবে সেই তথ্য জোগাড় হবে, তা নিয়ে আমরা ভাবনাচিন্তা শুরু করেছি। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে এই তথ্য থাকা অত্যন্ত জরুরি। 

    পুরসভার দাবি, ভাড়াটিয়াদের তথ্য জোগাড় করতে দু’ রকম পদ্ধতির কথা ভাবা হচ্ছে। প্রথমত, পুরসভার কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করবেন। দ্বিতীয়টি হল, বাড়ির মালিকদের আবেদন করা হবে তাঁদের বাড়িতে কারা ভাড়া রয়েছেন, সেই তথ্য পুরসভাকে জানাতে। তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সুজয় কবিরাজ বলেন, শহর ক্রমশ বাড়ছে। কাজের সূত্রে বহু বহিরাগত বাড়ি ভাড়া নিয়ে বাস করছেন। তাঁরা কী কাজ করছেন, সেই সম্পর্কে বিশদ তথ্য রাখা অত্যন্ত জরুরি। পুলিসের এক কর্তাও বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় ভাড়াটে সম্পর্কে বিশদে না জেনেই বাড়ি ভাড়া দিয়েছেন মালিকরা। ফলে তদন্তে সমস্যা হয়। বাড়ি মালিকও বিব্রত হন। এই তথ্য দেওয়া থাকলে সবার পক্ষেই সুবিধা।

    পাশাপাশি, শহরের হোটেলগুলিকেও সচেতন করার কথা ভাবছে পুর কর্তৃপক্ষ। পুরুলিয়া জেলা লাগোয়া ঝাড়খণ্ড রাজ্য। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, পুরুলিয়া ও আশেপাশের বিভিন্ন জেলায় অপরাধের সঙ্গে পড়শি রাজ্যের দুষ্কৃতীরা জড়িত। তাঁদের অনেকেই বিভিন্ন হোটেলে আশ্রয় নেয়। মাসখানেক আগেই রেল পুলিস ছয় দুষ্কৃতীকে পাকড়াও করে হোটেল থেকেই। এনিয়ে এক হোটেল মালিকের অবশ্য বক্তব্য, কেউ হোটেলে এলে আমরা তাঁর পরিচয়পত্র দেখেই থাকতে দিই। তবে সবকিছু তো যাচাই করা সম্ভব নয়। সেটা করলে কাস্টমাররা বিরক্ত হয়ে অন্য হোটেলে চলে যাবেন। ব্যবসার ক্ষতি হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)