• করোনাকালের পড়াশোনার ঘাটতি মেটাতে সামার ক্যাম্প মড়ার সম্মিলনী হাইস্কুলের
    বর্তমান | ২৬ মে ২০২৫
  • উজ্জ্বল পাল, বিষ্ণুপুর: করোনাকালে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় গ্রামাঞ্চলের অনেক ছাত্রছাত্রীর পড়াশোনার ভিত নড়বড়ে হয়েছে। তাদের পড়াশোনায় ঘাটতি মেটাতে ২২টি সামার ক্যাম্প চালু করেছে বিষ্ণুপুরের মড়ার সম্মিলনী হাইস্কুল। গরমের ছুটিতে প্রায় একমাস ধরে ওই সমস্ত ক্যাম্প চলবে। সমগ্র শিক্ষা মিশনের নির্দেশে বিদ্যালয়ের তরফে আয়োজিত শিবিরে স্থানীয় শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে পড়ুয়াদের পড়াচ্ছেন। এই শিবিরে পাঠ্যবই পড়ানো ছাড়াও নাচগান ও খেলাধুলা করানো হচ্ছে। করোনাকালে পিছিয়ে পড়া পড়ুয়াদের জন্য এই উদ্যোগকে অভিভাবকরা সাধুবাদ জানিয়েছেন। 

    এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিপ্লব ঘোষ বলেন, করোনার সময় স্কুল বন্ধ ছিল। সেই সময় অনেক ছাত্রছাত্রী নিয়ম অনুযায়ী নানা ক্লাসে উত্তীর্ণ হলেও তাদের পড়াশোনার ভিত আলগা হয়ে যায়। ফলে অন্য ছাত্রছাত্রীদের তুলনায় তারা বেশ কিছুটা পিছিয়ে পড়ে। ওই পড়ুয়াদের পড়াশোনায় ঘাটতি মেটাতে সমগ্র শিক্ষা মিশনের তরফে গ্রীষ্মের ছুটিকে কাজে লাগাতে বলা হয়। বিভিন্ন গ্রামে ও পাড়ায় সামার ক্যাম্প আয়োজনের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেইমতো আমাদের এলাকার বিভিন্ন গ্রামে ২২টি ক্যাম্প চালু করতে সক্ষম হয়েছি। সবমিলিয়ে, ৬৬জন শিক্ষিত যুবক-যুবতী ছাত্রছাত্রীদের পড়াচ্ছেন। আমরাও সপ্তাহে একদিন করে ক্যাম্প পরিদর্শন করছি। বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ বিভিন্ন শিবির পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বিধায়ক বলেন, করোনার সময় পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে সরকার বিশেষ ক্যাম্প চালু করেছে। এটা খুবই ভালো উদ্যোগ। আমি কয়েকটি ক্যাম্প পরিদর্শন করেছি।

    কুলুপুকুর, কলাইজুড়ি, ঘুঘুডাঙা, মাজুরিয়া, মড়ার প্রভৃতি গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, কোথাও গাছতলায়, কোথাও ক্লাবঘরে, গ্রামের আটচালায়, আবার কোথাও স্কুলে সামার ক্যাম্প চলছে। কোনওটি সকালে, আবার কোনওটি বিকেলে হচ্ছে। কোথাও পাঠ্যবই পড়ানো হচ্ছে। আবার কোথাও নাচ ও গানের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের শিবিরে আসার আগ্রহ বাড়ানো হচ্ছে। কোথাও কোথাও খেলাধুলোও করানো হচ্ছে। সমগ্র শিক্ষা মিশনের তরফে পড়ুয়াদের বইপত্র দেওয়া হয়েছে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ক্যাম্প পরিচালনায় সহযোগিতা করছে। মড়ার গ্রামের বাসিন্দা কুতুবুদ্দিন মণ্ডল বলেন, আমরা গরিব মানুষ। ছেলেমেয়েরা পড়াশোনার জন্য স্কুলের উপরই নির্ভরশীল। করোনার সময় স্কুল বন্ধ থাকায় প্রায় দু’বছর ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারেনি। আমরাও মাঠেঘাটে কাজের জন্য ঠিকমতো নজর দিতে পারিনি। ফলে সন্তানরা উঁচু ক্লাসে উঠে গেলেও তাদের ভিতটা আলগা। তাই গ্রীষ্মের ছুটিতে তাদের আলাদাভাবে ক্যাম্প করে পড়ানো নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ।
  • Link to this news (বর্তমান)