নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এবার স্বাভাবিক সময়ের কিছুটা আগেই রাজ্যে বর্ষা প্রবেশ করবে বলে আভাস দিয়েছে আবহাহাওয়া অফিস। তাই বর্ষার দাপট শুরু হওয়ার আগেই শহরের রাস্তাঘাটের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও মেরামতির কাজ সেরে ফেলতে চায় কলকাতা পুরসভা। বিশেষ করে বেহালা, জোকা, ঠাকুরপুকুর, হরিদেবপুর, গড়িয়া সহ পুরসভার সংযুক্ত এলাকার বিস্তীর্ণ অংশের রাস্তার হাল ফেরানোর জন্য দু’মাস সময় বেঁধে দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এই সব অঞ্চলে বছরের পর বছর ধরে চলছে কেইআইআইপি প্রকল্পের আওতায় নিকাশি পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ। ফলে এই অঞ্চলে বহু রাস্তার অবস্থা রীতিমতো বেহাল। এই পরিস্থিতিতে মেয়রের হুঁশিয়ারি, ‘আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে কেইআইআইপি প্রকল্পের সব কাজ শেষ করতে হবে। কোনও কথা শুনব না। তার মধ্যে রাস্তার হালও ফেরাতে হবে। না হলে ডিজি-কে সাসপেন্ড করব।’ দৃশ্যতই ক্রুদ্ধ মেয়রের মন্তব্য, ‘১ আগস্ট রাস্তার হাল দেখতে বেরব। একটা রাস্তাও খারাপ দেখতে পেলে ডিজিকে সাসপেন্ড করব।’
গত সাত-আট বছর ধরে পুরসভার সংযুক্ত এলাকায় বিভিন্ন রাস্তার নীচে নিকাশিনালা তৈরির কাজ চলছে। নিকাশির পাম্পিং স্টেশন নির্মাণ থেকে শুরু করে তাদের কাজের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামতির কাজও করছে কেইআইআইপি। এই কাজ নিয়েই বিস্তর অভিযোগ। সঠিক সময়ে কাজ শেষ না করা, পাইপলাইন পাতার পর রাস্তা খোঁড়া অবস্থায় ফেলে রাখা, অনেক জায়গায় সঠিকভাবে পাইপ না পাতা, বারবার একই কাজে টাকা খরচের মচো গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ রয়েছে। ফলে এসব এলাকার মানুষের কাছে ‘কেইআইআইপি’ শব্দটাই যেন বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেয়র নিজেও বলেছেন, ‘বেহালায় কেইআইআইপির পুরো বদনাম হয়ে গিয়েছে।’
এই প্রকল্পের আওতায় নিকাশি পরিকাঠামো তৈরির কাজ হয়ে যাওয়ার পর এখন রাস্তাগুলি মেরামতি চলছে। এর বাইরেও শহরের প্রায় ৫৭টি রাস্তায় কাজ চলছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। জুলাইয়ের মধ্যে সেই কাজগুলিও পুরোপুরি শেষ করতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন মেয়র। বৃষ্টির দাপট পুরোদমে শুরু হওয়া আগেই শহরের সব রাস্তার কাজ শেষ করতে চাইছে পুর কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, বেহালা, কুঁদঘাট, জোকা, টালিগঞ্জ, ব্রহ্মপুর, গড়িয়া, ঠাকুরপুকুর এলাকায় কেইআইআইপি এখন রাস্তার কাজ করছে। অভিযোগ, কাজ এতটাই ধীরে চলছে যে সব রাস্তা হাল কবে ফিরবে, তা নিয়ে ঘোর সংশয়ে এলাকাবাসী। বর্ষাকালে জল-কাদায় রাস্তায় মরণফাঁদ তৈরি হবে ভেবে আশঙ্কিত তারা। এই অবস্থায় স্বয়ং মেয়রের এহেন হুঁশিয়ারি ও সময় বেঁধে দেওয়ার ফলে সমস্যা কতটা মেটে, সেটাই এখন দেখার।