• চাকরিহারাদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জোড়া মামলা হাইকোর্টে
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৬ মে ২০২৫
  • ২০১৬ এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় ২৫ হাজার ৭৫২ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিল করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু হাল ছাড়েনি রাজ্য সরকার। চাকরিহারা শিক্ষা কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদেরকে রাজ্যের একটি বিশেষ তহবিল থেকে তাঁদেরকে ভাতা দেওয়ার ঘোষণা করে মমতার সরকার। এই মামলার যতদিন না নিষ্পত্তি হচ্ছে, ততদিন এই ভাতা দিয়ে যাবে বলে ঘোষণা করে রাজ্য। এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টে একটি রিভিউ পিটিশন করা হয়েছে। সেই মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চাকরিহারাদের ভাতা হিসাবে এই টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, রাজ্যের এই ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত সাময়িক। তাতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।

    নবান্ন জানায়, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল লাইভলিহুড অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি ইন্টেরিম স্কিম, ২০২৫’ প্রকল্পের অধীনে ওই ভাতা দেওয়া হবে। তা কার্যকর করা হবে গত এপ্রিল মাস থেকে। এতসবের পরেও যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, সেটাই সত্যি হল। রাজ্যের ঘোষিত এই ভাতার বিরুদ্ধে জোড়া মামলা হল হাইকোর্টে। এরপরই বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ ওই সিদ্ধান্তকেই চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। তাঁদের বক্তব্য, ওই কর্মীরা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি। দুর্নীতির অভিযোগে আদালত তাঁদের নিয়োগের পুরো প্যানেল বাতিল করেছে। এই অবস্থায় কেন তাঁদের ভাতা দেওয়া হবে, তা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তুলেছেন বঞ্চিতরা।

    চাকরিহারা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে এই মামলা দায়ের হল। সোমনাথ মণ্ডল-সহ বেশ কয়েকজন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী ওই মামলাটি দায়ের করেছেন। তাঁদের আবেদন, সব চাকরিপ্রার্থীকে ভাতা দেওয়া হোক। অথবা, রাজ্যের ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেওয়া হোক। আগামী ১০ জুন হাইকোর্টে বিচারপতি অমৃতা সিংহের বেঞ্চে গরমের ছুটির পরে মামলাটির শুনানি হবে।

    এ বিষয়ে মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, ‘আদালতের নির্দেশের ফলে চাকরি চলে গিয়েছে তার পরেও কী ভাবে ভাতা দেওয়া হয়? ভাতা দিতে হলে সবাইকে দেওয়া দরকার। তাতে নির্দিষ্ট করে কারও অধিকার থাকতে পারে না।’ যদিও রাজ্যের যুক্তি, সরকার চাকরিহারাদের প্রতি সংবেদনশীল। তাঁদের পরিবার রয়েছে। এত দিন তাঁরা চাকরি করতেন। এখন চাকরি চলে যাওয়ায় পরিবারের উপর তার প্রভাব পড়ছে।

    প্রসঙ্গত এসএসসির ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত চাকরিহারা শিক্ষকদের বেতন দিতে বলেছে দেশের শীর্ষ আদালত। যদিও চাকরিহারা গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের ক্ষেত্রে সেই সম্ভাবনা নেই। কারণ শীর্ষ আদালত এ বিষয়ে কোনও নির্দেশ দেয়নি। এই অবস্থায় তাঁদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ঘোষণা করেছিলেন, গ্রুপ সি কর্মীরা মাসিক ২৫ টাকা ও গ্রুপ ডি কর্মীরা মাসিক ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। গত শুক্রবার এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)