গলায় স্কিপিংয়ের দড়ির ফাঁস আটকে মৃত্যু সপ্তম শ্রেণির ছাত্রের
প্রতিদিন | ২৬ মে ২০২৫
অর্ণব আইচ: সিঁড়ির রেলিংয়ে দড়ি আটকে ‘ঝোলাঝুলি’ খেলা। দুই ভাই মিলে এই ‘বিপজ্জনক’ খেলা খেলতে গিয়েই শনিবার সন্ধ্যায় ঘটে গেল মর্মান্তিক ঘটনা। গলায় দড়ির ফাঁস আটকে মৃত্যু হল ১২ বছরের নাবালকের। চোখের সামনে ওই ঘটনাটি ঘটতে দেখে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে তার সাত বছরের ভাই।
পুলিশ জানিয়েছে, পূর্ব কলকাতার তপসিয়া রোডের বাসিন্দা ওই বালকের পরিবার। একটি পাঁচতলা বাড়ির একতলায় ওই বালকের মা-বাবা, ১৪ বছরের দিদি, ৯ বছরের ভাই থাকে। মৃত ওই ছেলেটির বয়স ১২ বছর। সে তপসিয়া এলাকায় একটি স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। তার বাবা বিশেষভাবে সক্ষম। তিনি একটি জায়গায় চাকরি করেন। পরিবারটির আসল বাড়ি কড়েয়া এলাকার তিলজলা শিবতলা লেনে। পরিবারটি নিজেদের বাড়িটি প্রোমোটিংয়ের জন্য দিয়েছেন। সেই কারণেই প্রোমোটার তাঁদের তপসিয়ার ওই বাড়িটির একতলায় ফ্ল্যাটে থাকার ব্যবস্থা করেছেন।
শনিবার সন্ধ্যায় তখনও বাবা কাজ সেরে বাড়ি ফেরেননি। মা গিয়েছিলেন কাছেই এক পরিচিতর বাড়িতে। সেখানেই ছিলেন অনেকক্ষণ। দিদি গিয়েছিল পড়তে। ওই নাবালক ভাইয়ের খেলছিল। তাদের ঘরের পাশেই সিঁড়ি। সিঁড়ির রেলিংয়ে স্কিপিংয়ের দড়ি আটকে তারা ঝোলাঝুলি করে। শনিবার বিকেল থেকে দু’ভাই মিলে এই খেলা খেলছিল। সন্ধ্যার পর তাদের দিদি পড়া থেকে বাড়িতে ফিরে এসে ঘরে ঢোকার সময়ই আঁতকে ওঠে। দেখে, বড় ভাইয়ের গলায় স্কিপিংয়ের দড়ি জড়ানো। ওই অবস্থায় ঝুলছে সে। ঘরে আতঙ্কে কাঁপতে কাঁপতে ক্রমাগত কেঁদেই চলেছে ছোট ভাই। নাবালিকা ওই কিশোরীর চিৎকারে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। খবর পেয়ে মা ও পরে বাবাও দ্রুত বাড়ি ফেরেন। প্রতিবেশীরা ছেলেটির গলা থেকে ফাঁস খুলে তাকে কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজও হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় তপসিয়া থানার পুলিশ। তদন্ত শুরু করার পর পুলিশের অভিমত, দড়ি ধরে দুই ভাই মিলে খেলতে গিয়েই কোনওভাবে ওই ১২ বছরের নাবালকের গলায় দড়ির ফাঁস আটকে যায়। সে আর ফাঁস খুলতে পারেনি। দাদাকে ওই অবস্থায় ঝুলতে দেখে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে তার ভাই অন্য ঘরে চলে যায়। সে আর কাউকে ডাকার সাহস করেনি। ঘটনাটির তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনায় এলাকা শোকের ছায়া।