অভিযুক্তকে পুলিসের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন তৃণমূল কর্মীরা
বর্তমান | ২৭ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, শীতলকুচি: পুলিসের গাড়ি থেকে অভিযুক্তকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের বিরুদ্ধে। সোমবার এ ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় শীতলকুচি ব্লকের কার্জিদিঘি গ্রামে।
এদিন শীতলকুচিতে সীমান্তের বাসিন্দাদের সঙ্গে জনসংযোগে করতে আসে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন সহ অন্যরা। কার্জিদিঘি গভর্নমেন্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই কর্মসূচি চলছিল। কর্মসূচি চলাকালীন কার্জিদিঘি বাজারের কাছেই সুশান্ত বর্মন নামে এক অভিযুক্তকে পুলিস আটক করে। এ খবর জানতে পেরে তৃণমূল কর্মীদের একাংশ বাইরে বেরিয়ে আসেন। তাঁকে কেন আটক করা হল এ নিয়ে পুলিসের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। পুলিসকে আটকে বিক্ষোভও দেখাতে থাকেন তৃণমূল কর্মীদের একাংশ। উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতেই ওই ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যান তাঁরা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় শীতলকুচি থানার ওসি অ্যান্থনি হোড়ো। আসে বিশাল পুলিস বাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিসকে লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করতে হয়। অভিযুক্তর খোঁজে এলাকায় তল্লাশি শুরু করেছে পুলিস। এ ঘটনায় দু’জনকে আটক করেছে পুলিস। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের শীতলকুচি ব্লক সভাপতি তপনকুমার গুহ জানান, এদিন দলীয় কোনও কর্মসূচি ছিল না। জেলা নেতৃত্ব সীমান্ত এলাকার গ্রামবাসীদের সঙ্গে জনসংযোগে আসে। সেখান থেকে অভিযুক্তকে নিয়ে যাওয়ায় বাসিন্দারা পুলিসকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় ও অভিযুক্তকে ছাড়িয়ে নেয়। এই ঘটনায় তৃণমূলের কেউ জড়িত নয়।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত সুশান্ত বর্মনের বিরুদ্ধে তাঁর এক নিকট আত্মীয়কে নির্যাতন ও গোপন ছবি স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল করার একটি অভিযোগ শীতলকুচি থানায় দায়ের হয়েছে। কয়েকদিন ধরে তার খোঁজ চালাচ্ছিল পুলিস। এদিকে, পুলিসের গাড়ি থেকে অভিযুক্তকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা সামনে আসতেই জোর রাজনৈতিক চর্চা শুরু হয়েছে শীতলকুচিতে। বিজেপি বিধায়ক বরেনচন্দ্র বর্মন বলেন, তৃণমূলের আমলে এ ধরনের ঘটনা নতুন কিছু নয়। তৃণমূল নেতাদের নির্দেশেই তাদের দুষ্কৃতীরা এই কাজ করেছে। অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী, পুলিস এই কথা শুনে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়েছে। আইনের রক্ষক হয়েও তৃণমূলের দাপটে তারা আইন সামলাতে ব্যর্থ।
যদিও বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, আমরা কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ওই ঘটনা ঘটেছে। তৃণমূল কর্মীরা ওই ঘটনায় জড়িত নয়। পুলিসের কাজে কেউ বাধা দিলে পুলিস আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ওসি অ্যান্থনি হোড়ো জানান, গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। - নিজস্ব চিত্র।