সন্ধ্যা নামলেই পুরসভা মার্কেটের দখল নেয় দুষ্কৃতী ও নেশাড়ুরা, ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা
বর্তমান | ২৭ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: জঙ্গিপুর পুরসভা মার্কেটে সন্ধ্যা নামতেই বসছে মদের আসর। গভীর রাত পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব চলে গোটা মার্কেট জুড়ে। মদের পাশাপাশি, গাঁজা ও হেরোইনের আসর বসে বলে দাবি। কার্যত গোটা মার্কেট দুষ্কৃতীদের মুক্ত অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। মার্কেটের যত্রতত্র জমে রয়েছে আবর্জনার স্তূপ। মদের বোতল, প্লাস্টিক সহ জিনিসপত্রের মোড়ক থেকে মলমূত্রও জমে রয়েছে। মার্কেটের ব্যবসায়ীরা এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরিবেশ না থাকায় মার্কেটে আসছেন না ক্রেতারা। তাতে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হচ্ছে। পুর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
এ প্রসঙ্গে জঙ্গিপুরের মহকুমা শাসক একাম জে সিং বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। বিষয়টি পুর কর্তৃপক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বলব। জঙ্গিপুরের পুলিস সুপার অমিতকুমার সাউ বলেন, বিষয়টি নিয়ে শীঘ্রই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। মার্কেট শেষে গেট বন্ধ করে দেওয়া হবে, যাতে করে বাইরের লোক ঢুকতে না পারে। রঘুনাথগঞ্জের ফুলতলায় জঙ্গিপুর পুরসভা মার্কেটে সন্ধ্যার পর থেকেই দুষ্কৃতীদের দখলে চলে যায়। স্থানীয় একাধিক দুষ্কৃতীর দল সেখানে আসর জমায়। মার্কেটের দোতলায় বারান্দায় বসে আসর। মার্কেটের যত্রতত্র পড়ে থাকে মদের একাধিক বোতল, খাবারের মোড়ক থেকে নোংরা আবর্জনা। বিশেষ করে সিঁড়ি ঘরে মদ গাঁজার আসরের পাশাপাশি মলমূত্র ত্যাগ করা হয়। মার্কেটে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এছাড়াও ব্যবসায়ীদের কার্টন, প্যাকেট ও নষ্ট হওয়া জিনিসপত্র জমে রয়েছে। প্রায় সপ্তাহ খানেক আগেই জমে থাকা আবর্জনার স্তূপে আগুন ধরে যায়। যদিও দোকানের মালিকরা বালতিতে করে জল ছিটিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে পরে ঘটনাস্থলে আসে জঙ্গিপুর দমকলের একটি ইঞ্জিন। বিড়ি বা সিগারেটের অংশ থেকেই সেখানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান পুলিসের। ঘটনার ক্ষোভ প্রকাশ করেন দোকানদাররা। আগুন আরও ছড়িয়ে পড়লে বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা ছিল।
মার্কেটে মোবাইল দোকানের মালিক রফিকুল আলম বলেন, মার্কেটে ব্যবসার পরিবেশ নেই। গ্যারাজ অন্যরা দখল করে নেয়। কেউ কেউ রাস্তা জুড়ে মাল মজুত করে রেখে দেন। কাস্টমার মার্কেটে আসতেই পারেন না। সন্ধ্যার পর থেকে মদ-গাঁজার আসর বসে। দুষ্কৃতীদের কিছু বলার সাহস হয় না। এতে প্রাণ সংশয় হতে পারে। পুরসভাকে বলেও কোনও লাভ হয়নি। অপর এক দোকানের মালিক বলেন, পুরো মার্কেটে আবর্জনা জমে রয়েছে। তাতে আগুন ধরে গিয়েছিল। বড়সড় বিপদ ঘটতে পারত। নিজেদের উদ্যোগেই মার্কেট চত্বর ও টয়লেট পরিষ্কার করতে হয়। পুরসভা কিছুই দেখে না।
পুরসভার চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম বলেন, মার্কেটের গেট বন্ধ করতে গেলে ব্যবসায়ীরাই আপত্তি জানান। পুলিস আছে, বিষয়টি তারাই দেখবে।-নিজস্ব চিত্র