• দালালচক্রের হাত থেকে জমি বাঁচাতে সক্রিয় নবদ্বীপের বাবলারি পঞ্চায়েত
    বর্তমান | ২৭ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা জমি। আপাতত খোঁজ নেই জমির মালিকের। তাই দালাল চক্রের হাত থেকে জমি বাঁচাতে সক্রিয় পঞ্চায়েত। পড়ে থাকা জমিটিতে পঞ্চায়েতের জায়গা বলে বোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। নবদ্বীপ ব্লকের বাবলারি পঞ্চায়েত এলাকায় এমনই ছবি উঠে এসেছে। পঞ্চায়েত প্রধানের দাবি, ওই জায়গাগুলি সরকারিভাবে অধিগ্রহণ করা হোক। কেননা জায়গার অভাবে পঞ্চায়েতের বহু উন্নয়নমূলক কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। সরকারিভাবে জায়গাগুলি অধিগ্রহণ করলে সেখানে বিনোদন পার্ক, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, আইসিডিএস সেন্টারের মতো প্রকল্পগুলি রূপায়িত করা যেতে পারে। এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও দাবি, ওই পড়ে থাকা জমিতে পঞ্চায়েতের উদ্যোগে এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ করা হোক।

    জানা গিয়েছে, বাবলারি পঞ্চায়েতের প্রাণগোপাল নগরে বছরের পর বছর ধরে পড়ে আছে বেশ কিছু ফাঁকা জমি। দীর্ঘদিন ধরেই এই জমিগুলির মালিকের কোনও খোঁজ নেই। অভিযোগ, এভাবে ফাঁকা পড়ে থাকা জমিগুলি কিছু দালাল চক্র গোপনে বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। স্থানীয় সূত্রে বিষয়টি পঞ্চায়েত জানতে পারে। তারপরই এই সব জমিতে বোর্ড লাগানো হয়েছিল। তাতে লেখা আছে, ‘এই জায়গা বাবলারি গ্রাম পঞ্চায়েতের’। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, কয়েকদিন পর রাতের অন্ধকারে কে বা কারা বিজ্ঞপ্তির বোর্ডগুলি খুলে নিয়ে গিয়েছে। 

    স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্য কৃষ্ণরঞ্জন শর্মা বলেন, আমাদের এই প্রাণগোপাল নগরে দু’টি জায়গা বছরের পর বছর পড়ে আছে। গোপনে ওই জমিগুলির কাগজপত্র তৈরি করে বিক্রির পরিকল্পনা চলছিল। 

    এ প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত প্রধান নারায়ণ কর্মকার বলেন, এই জমিগুলি প্রায় পঞ্চাশ বছরের বেশি সময় ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ওইসব জমির মালিকদের দীর্ঘদিন ধরে খোঁজা হচ্ছে। জমিগুলি যাতে কোনওভাবেই দখল না হয়, সেটা নজরে রেখেছি। মনে রাখতে হবে পঞ্চায়েত এলাকায় জমি জায়গার অভাবে স্বাস্থ্যকেন্দ্র, শিশুদের বিনোদন পার্ক, স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী, আইসিডিএস সেন্টারের মতো বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়িত করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে, এই  প্রাণগোপাল নগরের একটি ৬ কাঠা জমিতে, জমির মৃত মালিকের বোন সাজিয়ে পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের কাছ থেকে ওয়ারিশন সার্টিফিকেট হাতিয়ে নেওয়া হয়। সেই সার্টিফিকেটের দৌলতে প্রশাসনিক স্তরে জমি রেজিস্ট্রি এবং জমির রেকর্ডও করিয়ে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে পঞ্চায়েত গোটা বিষয়টি জানতে পেরে ওয়ারিশন সার্টিফিকেটটি বাতিল করে দেয়। জানা গিয়েছে, ২০২৪ সালের ১৯ জুন এই ওয়ারিশন সার্টিফিকেটটা ইস্যু হয়। পঞ্চায়েত অসাধু চক্রের কথা জানতে পেরে একদিন পরেই অর্থাৎ ২১ জুন সেই ওয়ারিশন সার্টিফিকেটটি বাতিল করে দেয়। কিন্তু ওই একদিনের মধ্যে জমি রেকর্ড এবং রেজিস্ট্রি কী করে করিয়ে ফেলল, সেটাই এখন প্রশ্ন? আমরা নিশ্চিত ওই জায়গার মালিক আর রেকর্ড করিয়ে নেওয়া ব্যক্তি এক নন। গোটা বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হচ্ছি। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)