অর্ণব দাস, বারাসত: চিপস ‘চুরি’র অভিযোগের ধাক্কা সামলাতে না পেরে আত্মঘাতী হয়েছিল সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। এবার বিস্কুট চোর সন্দেহে ১৩ বছরের নাবালকের নাক ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল দোকানদারের বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে হাবড়া থানার সংহতি স্টেশন লাগোয়া শলুয়া এলাকায়। অভিযোগ, জখম নাবালককে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার সময় পরিবারের পথ আটকায় পুলিশ। থানায় অভিযোগ না করে টাকাপয়সা নিয়ে মিটিয়ে নেওয়ার নিদান দেয় উর্দিধারীরা। যদিও শেষমেষ থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। কিন্ত তারপর ১২ ঘণ্টা কেটে গেলেও অভিযুক্ত অধরাই। অভিযুক্ত দিব্য দোকানদারি করছেন বলে দাবি।
আক্রান্ত নাবালকের বাবা সঞ্জয় হলাদার জানিয়েছেন, সকালবেলা তিনি ছেলেকে ২০ টাকা দিয়ে কাজে গিয়েছিলেন। বিকেলে তার ছেলে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে খেলার মাঠে যাচ্ছিল। তখন বিস্কুট কেনার জন্য সংহতি শলুয়া রেলগেট লাগোয়া শচীন্দ্রনাথ দাসের মুদি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ে। সঙ্গে ছিল নাবালকের আরও পাঁচ বন্ধু। বিস্কুট কিনে টাকা দেওয়ার আগেই দুই বন্ধু চলে যায়। তখন শংকর পাল নামে পাশের এক দোকানদার এসে শচীন্দ্রনাথকে বলেন, চলে যাওয়া দুই নাবালক হয়তো বিস্কুট নিয়ে পালিয়েছে। এই কথা শোনামাত্র শচীন্দ্রনাথ দাস দোকানের সামনে পড়ে থাকা কাঠের টুকরো নিয়ে নাবালকদের উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। তিন নাবালক পালিয়ে গেলেও সঞ্জয় হালদারের ছেলের নাক ফাটিয়ে দেয় অভিযুক্ত দোকান মালিক। নাবালকের চিৎকারের ছুটে আসেন স্থানীয়রা।
প্রহৃতের বাবার অভিযোগ, “ছেলেকে মিথ্যা অভিযোগে মারল। অথচ তাকে ডাক্তারের কাছে না নিয়ে গিয়ে প্রমাণ লোপাটের জন্য দোকানের সামনে পরে থাকা তাজা রক্ত ধুতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন দোকান মালিক।” তাঁর আরও চঞ্চল্যকর দাবি, “মছলন্দপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ছেলেকে ডাক্তার দেখানোর পরে ডাক্তারবাবু সিটি স্ক্যান করানোর কথা বলেন। সেইমতো ছেলেকে নিয়ে কলকাতায় সিটি স্ক্যান করাতে যাচ্ছি তখন সংহতি স্টেশনের কাছে পথ আটকায় হাবরা থানার বাউগাছি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সুব্রত নায়েক। এই পুলিশকর্তার স্পষ্ট বক্তব্য ছিল, অভিযোগ না করে টাকা পয়সা দিয়ে মিটিয়ে নিন।” যদিও অভিযুক্ত শচীন্দ্রনাথ দাস মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি যখন লাঠি উঁচিয়ে শাসন করছিলাম তখন ওই নাবালক পালাতে গিয়ে নাকে লেগে যায়।” অবশেষে মঙ্গলবার রাত ১২টা নাগাদ হাবড়া থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। তবে অভিযোগ দায়েরের পর ১২ ঘন্টা কেটে গেলেও এখনও অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।