বকেয়া বেতন সহ একগুচ্ছ দাবি, প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে পথে নামলেন কেন্দ্র অধিকৃত চা বাগানের শ্রমিকরা ...
আজকাল | ২৮ মে ২০২৫
অতীশ সেন, ডুয়ার্স: প্রধানমন্ত্রীর আলিপুরদুয়ার সফরের আগে বকেয়া বেতন সহ প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রাচুইটির সমস্যা সমাধানের দাবিতে পথে নামলেন কেন্দ্র সরকার অধিগৃহীত অ্যান্ড্রু ইউল গ্রুপের চারটি চা বাগানের শ্রমিকেরা। মঙ্গলবার বিকেলে তাঁরা মিছিল করে বানারহাটে পৌঁছন। এরপর ১৭ নম্বর জাতীয় সড়কে প্রতীকী অবরোধ করে কিচ্ছুক্ষণ তাঁরা বিক্ষোভ দেখান।
২৯ মে বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর আগে শেষবার ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে আলিপুরদুয়ারে এসেছিলেন তিনি। কেন্দ্র সরকারের অধিগৃহীত চা বাগানের শ্রমিকেরা তাঁদের বেতন সহ বিভিন্ন সমস্যা প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনতেই এই অরাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প ও সরকারি শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রকের অধীনস্থ অ্যান্ড্রু ইউল সংস্থার অধীনে অসমে সাতটি এবং পশ্চিমবঙ্গে পাঁচটি চা বাগান ও চা উৎপাদনের ফ্যাক্টারি রয়েছে। এর মধ্যে বানারহাট ব্লকে রয়েছে চুনাভাটি, নিউ ডুয়ার্স, বানারহাট এবং কারবালা চা - এই চারটি চা বাগান। এই বাগান গুলির শ্রমিকেরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন সহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। এর আগেও বিভিন্ন সময় তাঁরা পথ অবরোধ ও কাজ বন্ধ করে প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন।
নিউ ডুয়ার্স চা বাগানের অমিত হেমব্রম, গণেশ কামী, কারবালা চা বাগানের কিরণ দর্জি জানান- তাঁদের পাঁচ সপ্তাহের বেতন বকেয়া রয়েছে। ই.পি.এফ-এর টাকা বেতন থেকে কাটা হলেও বাগান কর্তৃপক্ষ তা জমা করছেন না। অবসরের পর শ্রমিকেরা গ্রাচুইটির টাকা পাচ্ছেন না। প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা তুলতে পারছেন না। মজুরি নির্ধারনের চুক্তি অনুসারে বেতন ছাড়াও শ্রমিকদের পানীয় জল, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য পরিষেবা, জ্বালানি লাকড়ি, আবাস ইত্যাদি তাঁদের পাওয়ার কথা থাকলেও, এর বেশিরভাগ থেকেই তাঁরা বঞ্চিত। তাঁদের সমস্যা প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনার জন্য তাঁরা বাধ্য হয়ে অরাজনৈতিক ভাবে পথে নেমেছেন।
চা বাগান মজদুর ইউনিয়নের অজয় মাহালি বলেন, বাগানে চলা সমস্যা সমাধানের জন্য গত বছর চারটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হলেও তাতে নেওয়া সিদ্ধান্ত বাগান কর্তৃপক্ষ কার্যকর করছেন না। পুরনো গাছ তুলে ফেলে নতুন গাছ লাগানো, বাগানের পরিচর্যা করার মতোও কাজগুলিও হচ্ছে না। এমন চললে বাগানের অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে পড়বে। চা বাগানের ম্যানেজার সহ বানারহাটের বিডিও, থানা, জেলাশাসক, শিলিগুড়ির সহকারি লেবার কমিশনারকে তাঁরা সোমবার আরেকবার সমস্ত শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবিপত্র জমা করেছেন। বাগান কর্তৃপক্ষ এরপরও কোনও পদক্ষেপ করছেন না।