• শ্বাসনালীর মধ্যে ঢুকে গিয়েছিল মরচে ধরা ধাতব পিন, মরণাপন্ন বালকের প্রাণ বাঁচাল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ...
    আজকাল | ২৮ মে ২০২৫
  • বিভাস ভট্টাচার্য: ধাতব পিন ঢুকে গিয়েছিল বাঁদিকের শ্বাসনালীতে। ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়ছিল সংক্রমণ। শরীরে কমে আসছিল অক্সিজেনের মাত্রা। জটিল অস্ত্রোপচারে প্রাণ বাঁচালেন হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের চিকিৎসকরা। আপাতত ওই বালককে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে এই অস্ত্রোপচার করা হয়।

    জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগণার স্বরূপনগরের বাসিন্দা বছর দশেকের এই বালককে ভর্তি করা হয়েছিল বসিরহাট সরকারি হাসপাতালে। উপসর্গ ছিল, বুকের বাঁদিকে ব্যাথা, কাশি এবং হালকা শ্বাসকষ্ট। এক্স রে করে দেখা যায় তার বুকের বাঁদিকের শ্বাসনালীতে একটি পিন আটকে আছে। সেখান থেকে তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত প্রায় সাড়ে তিনটে নাগাদ তাকে মেডিক্যাল কলেজের ইমার্জেন্সিতে আনার পর সিটি স্ক্যান করে দেখা যায় শ্বাসনালীর মধ্যে ওই পিনটি বেশ গভীরে ঢুকে গিয়েছে এবং বাঁদিকের ফুসফুস চুপসে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। 

    তৈরি হয় একটি বিশেষ দল। ছিলেন ইএনটি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডাঃ দীপ্তাংশু মুখোপাধ্যায়, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ডাঃ বিজন অধিকারী, থার্ড ইয়ার জুনিয়র রেসিডেন্ট ডাঃ শুভ্রজিৎ নস্কর, প্রথম বর্ষের জুনিয়র রেসিডেন্ট ডাঃ প্রতীক্ষা সাহু এবং ভিজিটিং কনসালট্যান্ট ডাঃ তনয়া পাঁজা। ছিলেন দুই অ্যানেস্থেসিস্ট। অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডাঃ দেবাশিস ঘোষ ও অ্যাসিস্ট্যান্ট ডাঃ শুক্লা কুণ্ডু। 

    অস্ত্রোপচারে অংশ নেওয়া এক চিকিৎসক জানান, অস্ত্রোপচারের সময় যেখানে ওই পিনটি ফুটে ছিল সেই জায়গায় বারবার রক্তে ভরে যাচ্ছিল। সেইসঙ্গে পিনটি এমনভাবে গেঁথে ছিল যে চট করে সেখান থেকে বের করে আনা যথেষ্টই কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। এরপর ডাঃ দীপ্তাংশু মুখোপাধ্যায় পিনটি বের করে আনেন। বাঁদিকের ফুসফুসে যেহেতু সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে তাই শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাচ্ছিল। ফলে এই জায়গাটা মাথায় রেখেই এগোতে হচ্ছিল। শেষপর্যন্ত সফলভাবেই দু'ঘণ্টার চেষ্টায় অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। আপাতত ওই বালককে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

    কীভাবে এই পিন ছেলেটির শরীরে ঢুকেছিল? উত্তরে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এবিষয়ে রোগী বা তার বাবা এবং মা, কেউই কিছু পরিষ্কার করে বলতে পারেননি।
  • Link to this news (আজকাল)