সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: পেশায় বিটেক ইঞ্জিনিয়ার। রাজনীতির নেশা খানিকটা বাবাকে দেখে। কিন্তু নিজেও যে প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে এভাবে জড়িয়ে পড়বেন, তা বোধহয় নিজেও জানতেন না কালীগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনের তৃণমূল প্রার্থী আলিফা আহমেদ। অথচ বাস্তবে তাঁকে বাবার অসমাপ্ত কাজ করার ভার নিতে হল। প্রয়াত বিধায়ক নাসিরউদ্দিন আহমেদের মেয়েকেই উপনির্বাতচনের লড়াইয়ের ময়দানে নামিয়েছে রাজ্যের শাসকদল।
কালীগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে মঙ্গলবারই সিলমোহর পড়েছে প্রয়াত বিধায়ক নাসিরউদ্দিন আহমেদের কন্যা আলিফা আহমেদের নামে। তাঁকে নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে জল্পনা চলছিল। তিনিই ভোটে লড়বেন, প্রায় ৯০ শতাংশ নিশ্চিত ছিল জেলা নেতৃত্ব। শুধু অপেক্ষা ছিল আনুষ্ঠানিক ঘোষণার। মঙ্গলবার সকালে দলের তরফে সোশাল মিডিয়ায় তাঁর নাম ঘোষণা করা হল। তারপর থেকেই হাজার হাজার শুভেচ্ছাবার্তা পেয়েছেন আলিফা। কৃষ্ণনগরের সাংসদ তথা জেলা চেয়ারপার্সন মহুয়া মৈত্রও তাঁকে সোশাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
অনেকেই বলছে, মহুয়ার সঙ্গে আলিফার বিস্তর মিল হয়েছে। রাজনীতিতে আসার আগে মহুয়া মৈত্র কর্পোরেট সংস্থার উচ্চ পদে চাকরি করতেন। ইন্টারন্যাশনাল ব্যাঙ্কিং সেক্টরে ছিলেন তিনি। তথাকথিত উচ্চবিত্ত, বিলাসী জীবনযাপন ছেড়ে জনসেবার কাজে নেমেছেন। করিমপুরের বিধায়ক হিসেবে পাঁচ বছর কাজ করেছেন। হাজার বিতর্ক সামলে তারপর দু’বার কৃষ্ণনগর থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। আলিফার জীবনের বাঁকের ধরনও তেমনই।
৩৮ বছরের আলিফা কৃষ্ণনগরের নামী বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম থেকে খুব ভালো রেজাল্ট করে পাশের পর দুর্গাপুর থেকে বিটেক ডিগ্রি পাওয়া আলিফা এই মুহূর্তে দেশের নামী বহুজাতিক সংস্থার বেশ বড় পদেই চাকরি করেন। আর রাজনীতি তিনি শুরু করেছেন একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে আলিফা আহমেদ নদিয়া জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ২০২৩-এর পঞ্চায়েত ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি তিনি। আর এবার লড়াই আরও বড় ময়দানে। ২০২৫ সালের বিধানসভা উপনির্বাচনে কালীগঞ্জের প্রার্থী হলেন প্রয়াত বিধায়কের কন্যা। বাবার ছত্রছায়ায় থাকার ফলে তাঁর জনসংযোগও বেশ ভালো। আর সেটাই আলিফার জয়ের পথে অ্যাডভান্টেজ বলে মনে করছেন তিনি নিজেও। বলছেন, ”নিজের কাজ, দায়িত্ব সম্পর্কে আমি সচেতন। তাই জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী।” তাহলে কর্পোরেট জগৎ থেকে আমজনতার দরবারে তাঁর পদার্পণ শুধুই সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করছেন ঘনিষ্ঠরা।