পাঁচ নদীর সাতটি পাড় মেরামত হয়নি, বর্ষার মুখে সেচদপ্তরের ভূমিকায় ক্ষোভ
বর্তমান | ২৮ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: প্রাকবর্ষার বৃষ্টি অব্যাহত। তবু শিলিগুড়ি ও সংলগ্ন এলাকার পাঁচটি নদীর সাতটি পাড় বোল্ডার দিয়ে বাঁধানোর কাজ শেষ হয়নি। সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলির জন্য বরাদ্দের পরিমাণ প্রায় সাত কোটি টাকা। সেচদপ্তরের একাংশের উদাসীনতার জেরে প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত হয়নি বলে অভিযোগ। এনিয়ে নদী তীরবর্তী গ্রামের বাসিন্দারা রীতিমতো আতঙ্কিত। সেচদপ্তর অবশ্য উদাসীনতার অভিযোগ মানতে নারাজ। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষ বলেন, পাড় বাঁধানোর ব্যাপারে সেচদপ্তরের সঙ্গে কথা হয়েছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে।
রাজ্যের নদী বেষ্টিত মহকুমাগুলির মধ্যে শিলিগুড়ি অন্যতম। মহানন্দা, বালাসন, চামটা, পঞ্চনই সহ অসংখ্য নদী মহকুমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ইতিমধ্যে পাহাড় ও সমতলে প্রাকবৃষ্টির জেরে নদীগুলির জলস্তরও কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু গত বর্ষার মরশুমে ক্ষতিগ্রস্ত নদীর পাড় এখনও পর্যন্ত মেরামতা করা হয়নি। সেগুলির মধ্যে শিলিগুড়ি শহরের মোহন বাগান লেনে মহানন্দা নদীর বাঁ হাতের পাড় অন্যতম। দাগাপুর, ফুলবাড়ি, মাঝুয়া, মাটিগাড়া, ফাঁসিদেওয়ার ভাঙন কবলিত এলাকাগুলির অবস্থাও একই।
সমগ্র পরিস্থিতি নিয়ে গ্রাম ও শহরের বাসিন্দারা রীতিমতো ক্ষুব্ধ। তাঁরা সেচদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, শুখা মরশুমে সেচদপ্তর হাতগুটিয়ে বসেছিল। তাই মহানন্দা সহ বিভিন্ন নদীর ক্ষতিগ্রস্ত পাড় এখনও মেরামত হয়নি। এবারও বর্ষায় সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।
শিলিগুড়ি মহকুমা ও জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের একাংশ সেচদপ্তরের শিলিগুড়ি ডিভিশনের অধীনে। প্রশাসন সূত্রে খবর, মহকুমা ও আশপাশ এলাকার বিভিন্ন নদীর ক্ষতিগ্রস্ত ৪০টি পাড় চিহ্নিত করা হয়েছিল। সেগুলির মধ্যে ৩৩টি পাড় বাঁধানো হয়েছে। তাতে খরচ হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা। মহানন্দা, বালাসন, রক্তি, রোহিণী প্রভৃতি নদীতে বাঁধ হয়েছে। এরবাইরে মহানন্দা নদীর মোহন বাগান লেনের পাশে ২৫০ মিটার, ফুলবাড়ির লালগছজোতে ৬৬০ মিটার, মাঝুয়ায় ৩০০ মিটার, দাগাপুরে পঞ্চানই নদীর দেড় কিমি, মাটিগাড়ায় রোহিণী নদীর ১৫০০ মিটার, খড়িবাড়িতে ডুডলং নদীর ২৯০ মিটার, ফাঁসিদেওয়ায় কুরুন্দ নদীর ৪৩০ মিটার অংশ বোল্ডার, তারজালি, ইউক্যালিপটাস গাছের গুঁড়ি দিয়ে মেরামত করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সাতটি কাজের জন্য বরাদ্দের পরিমাণ ৬ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা। সেচদপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা বলেন, রাজ্য থেকে প্রকল্পগুলি অনুমোদন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঝাঁপানো হয়েছে। প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত করার সময়সীমা জুন মাস পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে মোহন বাগান লেন সহ কয়েকটি কাজ শেষ করা হবে। পরিস্থিতির মোকাবিলায় দু’টি ক্যুইক রেসপন্স টিম গঠন করার পাশাপাশি বালির বস্তা, বোল্ডার, নাইলনের দড়ি মজুত করা হয়েছে। এবার বর্ষা নির্দিষ্ট সময়ের বেশ কিছুদিন আগেই নামছে। কাজেই উদাসীনতার অভিযোগ ঠিক নয়।