বাংলাদেশি চর সন্দেহে বাগডোগরায় ফের ধৃত ১, উদ্ধার গুরুত্বপূর্ণ নথি
বর্তমান | ২৮ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: ফের বাংলাদেশি চর ধৃত শিলিগুড়িতে! মঙ্গলবার সেনাবাহিনী বাগডোগরা থেকে সন্দেহভাজন ওই চরকে ধরে পুলিসের হাতে তুলে দিয়েছে। ধৃতের নাম আজিরুল ইসলাম। বাংলাদেশের দিনাজপুরে ধৃতের বাড়ি। এনিয়ে তিন সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকা থেকে বাংলাদেশি চর সন্দেহে দু’জন ধরা পড়ল। সমগ্র ঘটনায় পুলিস ও সেনাবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন পড়েছে।
সেনাবাহিনীর একাংশের সন্দেহ, ধৃত ব্যক্তি বাংলাদেশি চর। তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যেই সে এপারে এসেছে। শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিস কমিশনার (পশ্চিম) বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, ধৃত বাংলাদেশির বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। কী উদ্দেশ্যে ধৃত এখানে এসেছে, তা জানার চেষ্টা চলছে।
শিলিগুড়ি শহর সংলগ্ন এলাকা অবস্থিত সেনা ছাউনিগুলির মধ্যে ব্যাংডুবি সেনা ছাউনি অন্যতম। সেই সেনা ছাউনির পাশেই সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসের ক্যাম্প। পুলিস ও গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পের কাছে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করছিল আজিরুল। দীর্ঘক্ষণ ধরে পর্যবেক্ষণ করার পর তার কাছে যান সেনা জওয়ানরা। তার নাম জিজ্ঞেস করলে সে প্রথমে বলতে চায়নি। পরে সেখান থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টা করে। এরপর জওয়ানরা ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলে সে নিজেকে বাংলাদেশি বলে পরিচয় দেয়। সঙ্গে সঙ্গে বাগডোগরা থানার পুলিসের হাতে অভিযুক্ত বাংলাদেশিকে তুলে দেওয়া হয়।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে খবর, ধৃতের কাছ থেকে বাংলাদেশের কিছু খবরের কাগজের কাটিং, ভারতীয় সেনাবাহিনীর কিছু নথি মিলেছে। এর থেকেই মনে হচ্ছে চরবৃত্তি করার উদ্দেশ্যেই সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যাম্প চত্বরে ঘোরাঘুরি করছিল। তবে ধৃত বাংলাদেশির কাছে পাসপোর্ট নেই। সে কোন সীমান্ত দিয়ে এখানে এসেছে তাও জানা যায়নি। প্রায় ১৭ দিন আগে ব্যাংডুবিতেই সেনা ছাউনির কাছ থেকে বাংলাদেশি গোয়েন্দা সংস্থার এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সেই ঘটনার পর ফের সন্দেহভাজন আরএক চর গ্রেপ্তার হওয়ায় গুঞ্জন উঠেছে। গোয়েন্দাদের বক্তব্য, ‘চিকেনস নেক’ শিলিগুড়ির উপর টার্গেট বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও চীনের। সম্ভবত সেনাবাহিনীর তথ্য সংগ্রহ করতেই ওই চরদের নিয়োগ করছে পাকিস্তান। এজন্য বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছে পুলিস ও গোয়েন্দারা।
এদিকে, বাংলাদেশে লোক পারাপারের সঙ্গে জড়িত বেশকিছু সন্দেহভাজন শিলিগুড়ি পুলিসের র্যাডারে রয়েছে। পুলিস সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে এনজেপি, ভক্তিনগর, আশিঘর ও রাজগঞ্জ এলাকা থেকে কয়েকজন এজেন্টকে পাকড়াও করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন জামিনে ছাড়া পেয়েছে। তাদের গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছে। এছাড়া আরও কয়েকজন সন্দেহভাজনের খোঁজ মিলেছে।