সংবাদদাতা, হরিশ্চন্দ্রপুর: কিছুদিন ধরে এলাকায় ছাগল চুরির সংখ্যা বাড়ছিল। অনেক খোঁজখবর করেও হদিশ করতে পারেননি বাসিন্দারা। কিন্তু হাল না ছেড়ে তক্কে তক্কে ছিলেন কয়েকজন। অবশেষে রহস্য ফাঁস হল। ড্রাগ কেনার টাকা জোগার করতে এলাকার কয়েকজন যুবক ছাগল চুরি করে বাইরে বিক্রি করছিলেন। সোমবার রাতে সেই রাগ গিয়ে পড়ল ড্রাগ বিক্রেতা দম্পতির উপর। তাঁদের বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখানোর পর উত্তমমধ্যম দিলেন বাসিন্দারা। খবর পেয়ে পুলিস এসে ড্রাগস কারবারি সহ আরও দু’জনকে আটক করে নিয়ে গিয়েছে। রাত ন’টা নাগাদ হরিশ্চন্দ্রপুরের বাইসা বাগান এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। খবর পেয়ে এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিস।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, দম্পতি হাবিবুর রহমান ও রহিমা বিবি চার বছর ধরে বাড়িতে ড্রাগের কারবার চালাচ্ছেন। হরিশ্চন্দ্রপুর ও আশেপাশের এলাকা ছাড়াও রাতে বিহার থেকে তাঁদের কাছে ড্রাগ কিনতে আসতেন যুবকরা। অনেক গরিব পরিবারের যুবকও ওই চক্রে যুক্ত হয়ে পড়েন। টাকা জোগাড়ের জন্য তাঁদের অনেকে এলাকায় চুরি, ছিনতাই করছিলেন। তারমধ্যে বেশকয়েকটি ছাগল চুরির ঘটনাও ঘটে। সেরকম একটি ঘটনায় বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় এক যুবক ছাগল চুরির কথা স্বীকার করেন। তখন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, আগে একাধিকবার ওই দম্পতিকে ড্রাগের কারবার বন্ধ করতে বললেও তাঁরা কান দেননি। সোমবার রাতে এলাকার মহিলা ও পুরুষরা একজোট হয়ে কারবার বন্ধ করার কথা বলতে গেলে পাল্টা ওই দম্পতি মারতে উদ্যত হন। অস্ত্র দেখিয়ে বাসিন্দাদের ভয় দেখানো হয় বলেও অভিযোগ। তখনই জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করে দম্পতিকে।
স্থানীয় বাসিন্দা রুকসানা বিবি, সেরিনা খাতুন ও আব্দুল হকদের কথায়, প্রতিদিন সন্ধ্যা হতেই দল বেঁধে বাইরের লোকেরা ড্রাগ কিনতে আসে। গভীর রাত পর্যন্ত চলে তাদের আড্ডা। মহিলারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। চার বছরে এলাকায় চুরিও বেড়ে গিয়েছে। মাঝেমধ্যে জলের মোটর, ছাগল, সাইকেল ও বাইক চুরি হয়ে যাচ্ছে। কারবার বন্ধ করার জন্য বলতে গেলে গালিগালাজ করতেন আমাদের। তাই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বাসিন্দারা।
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি মনোজিৎ সরকার বলেন, এলাকায় যাতে কেউ মাদকদ্রব্য বিক্রি করতে না পারেন, সেজন্য পুলিসের নজরদারি রয়েছে। ড্রাগ কারবারি সহ তিনজনকে আটক করে তদন্ত চলছে।