১২ দিন আগে প্রবেশ করছে মৌসুমি বায়ু, কালই উত্তরে বর্ষা! দুর্যোগ মোকাবিলায় সতর্ক প্রশাসন
বর্তমান | ২৮ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: একদিন পরই গ্রীষ্মের অবসান। পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী কাল, বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গে প্রবেশ করবে মৌসুমি বায়ু। এবার স্বাভাবিকের থেকে প্রায় ১২ দিন আগে নামছে বর্ষা। এর জেরে পাহাড়ে ধস ও সমতলে নদীতে জলস্তর বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। আবহাওয়া দপ্তরের এমন পূর্বাভাস পেয়ে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা নিয়ে ফের পর্যালোচনা বৈঠক তলব করেছেন দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক প্রীতি গোয়েল। আজ, বুধবার তাঁর অফিসে সেই বৈঠক হবে। বৈঠকে পাহাড়ের ধসপ্রবণ এলাকা, সমতলের নদীর পাড়, বাঁধ, ত্রাণ শিবির, বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দপ্তরের পরিকাঠামো নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে বলে খবর।
কয়েকদিন পর মঙ্গলবার শিলিগুড়ির আকাশ ছিল মেঘমুক্ত। দিনভর রোদের তেজ ছিল অস্বাভাবিক। আজ, বুধবারও আবহাওয়া একইরকম থাকবে। বৃহস্পতিবার থেকে ফের আকাশে মেঘ জমবে। বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবেশের জেরেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে সিকিম কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে। ইতিমধ্যে তারা বৃহস্পতি থেকে সোমবার পর্যন্ত সতর্কতা জারি করেছে। শুক্র ও শনিবার উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও সমতলের বেশকিছু জায়গায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
শুধু শিলিগুড়ি নয়, দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারেও একই পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে। সিকিম কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের অধীকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, এবার কিছুটা আগেই উত্তরবঙ্গে মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করতে চলেছে। যার জেরেই এখানকার আকাশে মেঘের আনাগোনা বাড়বে। পাহাড় ও সমতলে বৃষ্টিও শুরু হবে।
সাধারণত উত্তরবঙ্গে মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করে ১০ জুন। এবার প্রায় ১২ দিন আগে এখানে বর্ষা নামছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, শৈলশহর দার্জিলিং ও কালিম্পং ধসপ্রবণ। ইতিমধ্যে দুই শহরের কিছু জায়গায় গাছ ভেঙে পড়া ও ধস নামার খবর মিলেছে। ভারী বৃষ্টির জেরে সংশ্লিষ্ট দু’টি শহরে ধস আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা। এই অবস্থায় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা নিয়ে পর্যালোচনা করতে ফের বৈঠক ডেকেছেন দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক। বৈঠকে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা, পূর্ত, সেচ, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, পুলিস, দমকল সহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিরা হাজির থাকবেন।
প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ধসপ্রবণ শতাধিক জায়গা চিহ্নিত করে নজর রাখা হচ্ছে। জেলাশাসক বলেন, বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা নিয়ে আগেই প্রস্তুতি বৈঠক করা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রতিটি মহকুমা ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের সতর্ক করা হয়েছে। আবহাওয়া, পাহাড়ের ধসপ্রবণ এলাকা এবং নদীর গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি বিপর্যয় ব্যবস্থাপনার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে আবার বৈঠক ডাকা হয়েছে।
এদিকে, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদও কন্ট্রোল রুম খোলার উদ্যোগ নিয়েছে। সভাধিপতি অরুণ ঘোষ জানান, শুক্রবার উন্নয়ন নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকের পর বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য কন্ট্রোল রুম চালু করা হবে।