সংবাদদাতা, ইসলামপুর: এবার জমির দলিল সহ আধার, ভোটার কার্ড সহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ নথিজাল চক্রের হদিশ চোপড়ায়। পুলিসের অভিযানে এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তার ৬। এরমধ্যে সোমবার রাতে গ্রেপ্তার হয়েছে ৪জন। ধৃতদের নাম শেখ ইব্রাহিম রাজা, জাহিরুল হক, সাহিল আখতার ও মেহেবুব আলম। সকলেই চোপড়ার বাসিন্দা। একের পর এক সাইবার অপরাধ সামনে আসায় কার্যত ‘উত্তরর জামতারা’ ট্যাগ লেগেছে ইসলামপুর পুলিস জেলার বিহার ও বাংলাদেশ ঘেঁষা চোপড়ার গায়ে। এবার জাল দলিল তৈরির ঘটনা সামনে আসায় ফের একবার শিরোনামে উঠে এসেছে চোপড়া।
ইসলামপুর পুলিস জেলার অতিরিক্ত পুলিস সুপার ও এএসপি (চোপড়া) আশিস কুমার মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, চলতি বছর মার্চ মাসে চোপড়ার এডিএসআর (অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট সাব রেজিস্টার) জমি সংক্রান্ত নথি আপলোড করার সময় জাল দলিলের তথ্য পান। এই বিষয়ে তিনি পুলিসে অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ওই অফিসের এক ক্যাজুয়াল স্টাফ ভাস্কর পালকে গ্রেপ্তর করা হয়েছিল। তাকে জেরা করে অমৃতকুমার সিংহকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৭ তারিখ পুলিস একটি মামলা রুজু করে অভিযান চালায়। কিন্তু সেদিন কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
সোমবার চোপড়া বিডিও অফিস সংলগ্ন এলাকায়, কম্পিউটার, মোবাইলের দোকান সহ ৪টি দোকানে অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিস সুপার বলেন, ধৃতদের দোকান থেকে নকল দলিল, ভুয়ো আধার কার্ড, ভুয়ো ভোটার ও ভুয়ো কাস্ট সার্টিফিকেট ও ওয়ারিশ সার্টিফিকেট পাওয়া গিয়েছে। অভিযানে নেমে গ্রেপ্তারির পাশাপাশি বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৪টি সিপিইউ, ৮টি হার্ডডিস্ক, ৪টি পেন ড্রাইভ।
ইসলামপুর কোর্টের সরকারি আইনজীবী অসীম পারভেজ বলেন, ৪ জনকে এই দিন কোর্টে তোলা হয়েছিল। ধৃত শেখ ইব্রাহিম রাজা, জাহিরুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা নকল দলিল তৈরি, নকল ভোটার কার্ড, আধার কার্ড বিক্রি করত। তাদের ৫ দিনের পুলিস রিমান্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ধৃত সাহিল আখতারের ফটোকপির দোকান এবং মেহেবুব আলমের মোবাইলের দোকান। তাদের বিরুদ্ধেও জাল ভোটার কার্ড সহ অন্যন্য নথি বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। ধৃতদের চার দিন পুলিস হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
নকল ভোটার কার্ড ও আধার কার্ড বিক্রির তথ্য উঠে আসায় সীমান্ত লাগোয়া চোপড়ায় কিছু প্রশ্ন উঠেছে। কিছুদিন আগে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চোপড়া ও ইসলামপুর সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করেছিলেন। নকল ভোটার ও আধার কার্ড অনুপ্রবেশকারীদের হাতে যাচ্ছে না তো? এমনই প্রশ্ন উঠেছে। যদিও পুলিস জানিয়েছে, তেমন কোনও তথ্য আপাতত পাওয়া যায়নি।