• চার চা বাগানেই বন্ধ বেতন, অবরোধ শ্রমিকদের মোদির সভার দিকে চেয়ে পঞ্চাশ হাজার বাসিন্দা
    বর্তমান | ২৮ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, ধূপগুড়ি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আলিপুরদুয়ার সফরের আগে বকেয়া বেতনের দাবিতে পথ অবরোধ করলেন কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন বানারহাটের চারটি চা বাগানের শ্রমিকরা। মঙ্গলবার তাঁরা জাতীয় পতাকা হাতে বানারহাট মোড়ে বসে পড়েন। এতে বানারহাট-মালবাজারগামী  পথ স্তব্ধ হয়ে যায়। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন অ্যান্ড্রুইউল গোষ্ঠীর বানারহাট, কারবালা, নিউডুয়ার্স এবং চুনাভাটি চা বাগানের পাঁচ সপ্তাহ ধরে বেতন বন্ধ। সমস্যা সমাধানে তাঁরা অবরোধের মাধ্যমে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনতে চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা। 

    কেন্দ্রের চার চা বাগানের শ্রমিকরা ভালো নেই। প্রধানমন্ত্রী আলিপুরদুয়ারের সভামঞ্চ থেকে চা শ্রমিকদের জন্য কোনও নির্দেশিকা দেবেন কি না, আপাতত সেই অপেক্ষায় রয়েছেন এই চার চা বাগানের প্রায় ৫০ হাজার বাসিন্দা।  স্থায়ী সুরাহা পেতে তাঁরা চেয়ে রয়ে রয়েছেন ২৯মে আলিপুরদুয়ারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভার দিকে। তাঁর জনসভার আগে ক্রমশ পারদ চড়ছে ডুয়ার্সের চা বলয়ে। 

    বানারহাট ব্লকের কেন্দ্রীয় সরকারের অধিগৃহীত অ্যান্ড্রুইউল গোষ্ঠীর বানারহাট, কারবালা, নিউ ডুয়ার্স ও চুনাভাটি চা বাগান। অভিযোগ, এই চারটি চা বাগানে মাঝেমধ্যেই বেতন সমস্যা চলে। আগেও বেতনের দাবিতে পথে নামতে হয়েছিল এই চা শ্রমিকদের। ভারত-ভুটান জাতীয় সড়কের পাশাপাশি ১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করতে হয়েছে চা শ্রমিকদের। সম্প্রতি পাঁচসপ্তাহ ধরে বেতন বন্ধ এই চারটি চা বাগানে। এছাড়াও রয়েছে বিবিধ সমস্যা।

    এই চারটি বাগানের প্রায় ৫০ হাজারের মতো মানুষের বসবাস। বাধ্য হয়ে চা শ্রমিকরা বাগান ছেড়ে ভিনরাজ্যে কাজে যাচ্ছেন। নিউ ডুয়ার্স চা বাগানের রাস্তার ধারে বসে থাকা লঙ্কর মুন্ডা এমনেই দাবি করলেন। তিনি বলেন, আমার চার ছেলে। দু’জন কেরলে কাজ করে। এখন দিব্যি চলছে। আগে চার ছেলেই এখানে কাজ করত। ঠিকমতো সংসার চলত না। বানারহাট চা বাগানের কর্মচারি আজাদ গোস্বামী বলেন, অ্যান্ড্রুইউল গোষ্ঠীর অধীনস্ত চারটি চা বাগানে পাঁচ সপ্তাহ শ্রমিকদের বেতন বন্ধ রয়েছে। এর আগেও একাধিকবার বেতন বন্ধ হয়েছে। তখন আন্দোলন করে বেতন আদায় করতে হয়েছে। 

    তৃণমূল শ্রমিক ইউনিয়নের বানাহাট শাখার সভাপতি বিধান সরকার বলেন, চারটি চা বাগানের অবস্থা ভালো নেই। ‌এই চারটি চা বাগানের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ। ‌কিন্তু, চা শ্রমিকরা পেটের টানে  বাগান ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা করব প্রধানমন্ত্রীর আলিপুরদুয়ারে রাজনৈতিক ভাষণ দেওয়ার আগে চা বাগানের সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দেবেন। তবে সাংসদ মনোজ টিগ্গার বক্তব্য, অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দেবেন। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, রাজ্য সরকারের অধীনে থাকা বাকি চা বাগানের অবস্থা কেমন? এই বিষয়ে কি নজর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য সরকারের অধীনে থাকা বেশ কয়েকটি চা বাগানে ছ’সপ্তাহ ধরে বেতন পাচ্ছে না শ্রমিকরা। পিএফ বকেয়া রয়েছে। 

     নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)