• পানীয় জলের সঙ্কটে ভুগছে নবদ্বীপের বাবলারি পঞ্চায়েতের ৫০০ পরিবার
    বর্তমান | ২৮ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: তীব্র পানীয় জলের সঙ্কটে ভুগছে নবদ্বীপ ব্লকের বাবলারি পঞ্চায়েতের নিতাই নগর, মিলন নগর এবং প্রাণগোপাল নগরের প্রায় ৫০০ পরিবার। নিতাই নগরের বাসিন্দারা অল্প কয়েকদিনের জন্য সরকারি কলের জল পেলেও, তা এখন পুরোপুরি বন্ধ। কিন্তু আজ পর্যন্ত সরকারি কলের জল-ই পৌঁছয়নি মিলন নগর ও প্রাণগোপাল নগরে। এইসব এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে কয়েক বছর আগে সৌরশক্তি চালিত সজলধারা প্রকল্প চালু করা হয়েছিল। কিন্তু সেটি প্রায় এক বছর ধরে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বিষয়টি বারবার পঞ্চায়েতে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি।

    বর্তমানে পানীয় জলের অবস্থা বেশ খারাপ। মাঝেমধ্যে ট্যাপ কল থেকে বের হয় নোংরা জল। তবে এখন এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বেশকিছু এলাকায় ট্যাপ কলে জলই আসছে না। বেশিরভাগ মানুষকেই কেনা জলের উপর ভরসা করতে হচ্ছে। অনেকে আবার বাড়ির বা রাস্তার টিউবওয়েলের উপর নির্ভর করছেন। তবে সেই জল ব্যবহার করে গৃহস্থালীর কাজকর্ম করা গেলেও তা পানের অযোগ্য। আবার কেউ কেউ পার্শ্ববর্তী পুরসভার ৪নম্বর ওয়ার্ডের ট্যাপ কল থেকে জল নিয়ে আসছেন। বাবলারি পঞ্চায়েতের নিতাই নগরে তেমাথার মোড়ে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের(টাইড) টাকায় সৌরশক্তি চালিত সজলধারা প্রকল্প নির্মাণ করা হয়েছিল। বর্তমানে বন-জঙ্গলে ঘিরে ধরেছে অকেজো প্রকল্পটিকে। এমনকী, উদ্বোধনের শিলা ফলকটিও পুরোপুরি জঙ্গলে ঢেকে গিয়েছে।

    স্থানীয় নিতাই নগরের বাসিন্দা টোটো চালক নরেশ সরকার, নিরঞ্জন রায় বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে ট্যাপ কলের জলও পাচ্ছি না। বিষয়টি বারবার পঞ্চায়েতকে জানিয়েছি। কিন্তু জল সমস্যার কোনও সমাধান হল না। নিতাই নগরের বাসিন্দা শিবানী হালদার, সুভাষ মণ্ডল বলেন, এলাকার সব বাড়িতে ট্যাপ কলের পানীয় জল আসত না। আমাদের মতো কয়েকজনের বাড়িতে কল থেকে খুব সরু হয়ে জল পড়ত। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে সেটুকু জলও পাচ্ছি না। মিলন নগরের বাসিন্দা জোৎস্না দেবনাথ বলেন, লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করি। আমাদের পক্ষে জল কিনে খাওয়া সম্ভব নয়। তাই অনেক দূর থেকেই জল আনতে হয়।

    স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্য কৃষ্ণরঞ্জন শর্মা বলেন, জলের ব্যাপারে বারবার পঞ্চায়েত ও ব্লকে জানিয়েছি। যাতে এই সৌরশক্তি চালিত সজলধারা প্রকল্পটি সারিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হচ্ছে না। এক বছর ধরে এটি খারাপ হয়ে পড়ে আছে। বলা হচ্ছে, ‘মেনটেন্যান্স’-এর টাকা এলেই মেরামত করে দেওয়া হবে। স্থানীয় মানুষ আমার কাছে এসে পানীয় জলের জন্য চোখের জল ফেলছেন।

    বাবলারি পঞ্চায়েতের প্রধান নারায়ণ কর্মকার বলেন, প্রায় আট বছর আগে নিতাই নগরে এই সজলধারা প্রকল্পটি তৈরি করা হয়। উমপুনের ঝড়ে এটি খারাপ হয়ে যায়। এবিষয়ে আমি বারবার পঞ্চায়েত সমিতি ও বিডিওকে জানিয়েছি। এমনকী, সংশ্লিষ্ট দপ্তরকেও জানানো হয়েছে। বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও আজ পর্যন্ত এটি সারানো হয়নি।
  • Link to this news (বর্তমান)