• শালবনীর ভাদুতলায় সিপিএমের পার্টি অফিস এখন মাছের আড়ত
    বর্তমান | ২৮ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শালবনী: সিপিএমের যে পার্টি অফিস এক সময়ে দিনরাত গমগম করত, সেই অফিসেই খুলল মাছের আড়ত। এক সময়ে এই পার্টি অফিস থেকেই চলত যাবতীয় জনবিরোধী কাজকর্ম। শালবনী ব্লকে কারা ঢুকছে, কারা বেরচ্ছে তা মনিটরিং করা হতো শালবনীর ভাদুতলার এই অফিস থেকেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, আগে পার্টি অফিসে ঢুকতে মানুষ ভয় পেত। পার্টি অফিসের ভিতরে ছিল অস্ত্রের ভাণ্ডার।

    ২০১১ সালে মানুষের রায়ে হার্মাদ বাহিনীর সেই অত্যাচার বন্ধ হয়ে যায়। সেইসব দিন আজও মানুষের স্মৃতিতে টাটকা। দিনের পর দিন সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার হয়েছে। সেই পাপের মূল্য চোকাতেই পার্টি অফিস ভাড়া দিতে হয়েছে এক মাছের আড়তদারকে। কারণ, আয়ে টান পড়েছে। পার্টি অফিস চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সিপিএমের এরিয়া কমিটির সদস্য শান্তি ভূঁই বলেন, পুরোনো পার্টি অফিস এক মাছের আড়তদারকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আশির দশকে ভাদুতলায় সিপিএমের এই পার্টি অফিসটি তৈরি হয়। সিপিএমের স্থানীয় নেতারাই পার্টি অফিসটি চালাতেন। প্রথমদিকে মানুষের সমস্যার সমাধান করা হতো এই কার্যালয় থেকে। কিন্তু একের পর এক নির্বাচনে জয়ের পরেই পার্টির নেতাদের কর্মকাণ্ড বদলাতে শুরু করে। মুখোশ খুলে যায়। জানা গিয়েছে, জঙ্গলমহলজুড়ে মাওবাদী আন্দোলনের প্রভাব পড়ে শালবনী ব্লকেও। তখন বোমা আর গুলির শব্দে ঘুম ভাঙত মানুষের। কোনও সরকারি প্রকল্পের সুবিধা মিলত না বাসিন্দাদের। যদিও তা নিয়ে বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা ছিল না সিপিএমের। হার্মাদ বাহিনীর এক প্রাক্তন সদস্যের কথায়, সিপিএম জামানার শেষের দিকে হার্মাদ বাহিনীর অত্যাচার বাড়তে শুরু করেছিল। পার্টি অফিসের ভিতরেই প্রচুর অস্ত্র রাখা হতো। প্রয়োজন অনুসারে সেই অস্ত্র তুলে দেওয়া হতো হার্মাদ বাহিনীর হাতে। হার্মাদ বাহিনীর নেতাদের এরিয়া ভাগ করে দেওয়া হতো। পার্টি অফিসের ভিতরে সাধারণ মানুষকে মারধর, মানসিক অত্যাচার করতেন নেতারা। একইসঙ্গে মানুষের বাড়ি থেকে জোর করে ছাগল-মুরগি-হাঁস নিয়ে এসে চলত ভূরিভোজ। প্রতিবাদ করার উপায় ছিল না। প্রতিবাদ করলে জুটত মার। মেয়েদের উপরেও নানা অত্যাচার করা হয়েছে।

    স্থানীয় তৃণমূল নেতা অসিত রায় বলেন, একসময়ে সিপিএমে ছিলাম। প্রথম দিকে সমস্যা না থাকলেও পরের দিকে নেতাদের অত্যাচার বাড়তে থাকে। শেষের দিকে সিপিএমের নেতাদের অত্যাচার ভালো চোখে নেয়নি সাধারণ মানুষ। বর্তমানে তাদের সংগঠনও দুর্বল হয়ে পড়েছে।

    রাজ্য তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ সিংহ বলেন, সিপিএমের অত্যাচারের দিন মানুষ আজও ভোলেনি। তাই ওরা শূন্যে পৌঁছে গিয়েছে। অহংকার, ঔদ্ধত্য সব শেষ হয়ে গিয়েছে। তাই এই দলটা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। মানুষ উন্নয়নের সঙ্গেই থাকবে। • নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)