নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: ঝাড়গ্রাম জেলাজুড়ে ই-কার্টে করে বর্জ্য সংগ্ৰহকরা হচ্ছে। বর্জ্য থেকে এবার জৈব গ্যাস তৈরি করা হবে। গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের নয়াবসান এলাকায় ৪৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বায়োগ্যাসের প্লান্ট তৈরি করা হবে। পাইপলাইনের মাধ্যমে বাড়িবাড়ি জৈব গ্যাস পৌঁছে দেওয়া হবে। বিকল্প জ্বালানি উৎপাদনে জেলা প্রশাসন এমনই উদ্যোগ নিচ্ছে।
ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের এডিএম দিলীপ মিশ্র বলেন, গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকে বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরি করা হবে।পচন ও অপচনশীল বর্জ্য, গোবর থেকে এখানে জৈব গ্যাস তৈরি করা হবে।প্লান্টের এক কিমির মধ্যে থাকা প্রতিটি বাড়িতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জৈব গ্যাস পৌঁছে দেওয়া হবে। ব্লকের অন্য এলাকাতেও ধাপে ধাপে জৈব গ্যাস পৌঁছে দেওয়া হবে। পরবর্তীতে অন্য ব্লকেও জৈব গ্যাসের প্লান্ট তৈরি করা হবে। জেলা প্রশাসন সূত্র অনুযায়ী, বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরির কাজ দ্রত শুরু হবে। টেন্ডার প্রক্রিয়ার কাজ শেষ হয়েছে। এতে উপকৃত হবেন আর্থিকভাবে দুর্বল প্রত্যন্ত এলাকার গ্ৰামীণ মানুষ।
ঝাড়গ্রাম জেলার ৭৯টি গ্ৰামপঞ্চায়েতকে চলতি বছরে তিনটি করে ই-কার্ট দেওয়া হয়েছে। গ্ৰামীণ এলাকা থেকে নিয়মিত পচন ও অপচনশীল বর্জ্য সংগ্ৰহ করা হচ্ছে। জেলারগোপীবল্লভপুর-১,সাঁকরাইল,বিনপুর-১ ও ঝাড়গ্ৰাম ব্লকে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে। ঝাড়গ্রাম শহরে বৃহৎ আকারে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্লান্ট গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।জেলার শহর ও গ্ৰামীণ এলাকায় নিয়মিত বর্জ্য সংগ্ৰহ করা হচ্ছে। সংগৃহীত বর্জ্যকে এবার বায়ো গ্যাস তৈরির কাজে ব্যবহার করা হবে। প্লাস্টিক বর্জ্যকে পিচ রাস্তা তৈরির কাজে ব্যাবহারকরা হচ্ছে। বর্জ্য থেকে জৈব সার তৈরির প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। অরণ্য অধ্যুষিত গ্ৰামীণ এলাকার মানুষ জ্বালানি হিসেবে এখনও গাছের শুকনো ডালপালা ব্যাবহার করেন। তা থেকে পরিবেশ দূষণ হয়। বায়ো গ্যাসের ব্যবহার হলে পরিবেশ দূষণ অনেকটাই রোধ করা যাবে।
জেলা পরিষদের সেক্রেটারি বিক্রম চট্টোপাধ্যায় বলেন, প্রথম পর্যায়ে প্লান্টের এক কিমির মধ্যে থাকা বাড়িগুলোতে পাইপ লাইনে করে বায়োগ্যাস পৌঁছে দেওয়া হবে। প্লান্টে ২৫ কিউবেক মিটার বায়োগ্যাস উৎপাদন করা হবে।প্লান্টের কাজ খুব দ্রুত শুরু করা হবে। এই উদ্যোগ পরিবেশ দূষণ যেমন কমবে, তেমনি বিকল্প জ্বালানির সুবিধা জেলার মানুষের কাছে পৌঁছবে। গোপীবল্লভপুর-১ পঞ্চায়েত সভাপতি হেমন্ত ঘোষ বলেন,প্লান্ট চালু হলে ব্লকে আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষের উপকার হবে। জেলার অন্য জায়গার মতো এই ব্লকেও বর্জ্য সমস্যা মাথাব্যথার কারণ।এই উদ্যোগে সেই সমস্যা অনেকটাই রোধ করা সম্ভব হবে বলেই মনে করছি। ভূবিজ্ঞানী প্রণব সাউ বলেন, উন্নত দেশগুলিতে জ্বালানি সঙ্কট কাটাতে বায়োগ্যাস উৎপাদনের উপর জোর আগেও দেওয়া হয়েছে। ঝাড়গ্রামের পরিবেশ রক্ষায় বায়োগ্যাস ব্যবহার বড় ভূমিকা নিতে পারে। প্রশাসনের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসাজনক। প্রতীকী ছবি