নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত ও সংবাদদাতা, বসিরহাট: শুক্রবারের পর ফের মঙ্গলবার! ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হাসনাবাদে ফের দেখা গেল রহস্যময় ড্রোন। হাসনাবাদের কাটাখালি সেতুর উপরে মঙ্গলবার রাতে চারটি রহস্যময় ড্রোন কিছুক্ষণ আকাশে উড়ে ফিরে যায় বাংলাদেশের দিকে। তিন দিনের ব্যবধানে ফের রহস্যময় ড্রোন ওই একই জায়গায় আকাশে উড়তে দেখে আতঙ্কিত স্থানীয়রা। তবে, পুলিসের একটি সূত্রের দাবি, এটা বাংলাদেশে বিক্রি করা এলেন মাস্কের ‘স্টারলিঙ্ক’এর ড্রোন। ঠিক কী কারণে তা ওড়ানো হল এপারের আকাশে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত শুক্রবার রাতে ভারত বাংলাদেশের সীমান্তের হাসনাবাদের কাটাখালি ব্রিজের উপর রহস্যময় ড্রোন উড়তে দেখা যায়। ব্রিজের উপরে থাকা যুবকরা রহস্যজনক তিনটি ড্রোন উড়তে দেখেন। সেগুলি গৌড়শ্বের নদীর ওপর প্রান্তের বাংলাদেশের সাতক্ষীরার দিক থেকে উড়ে এসেছিল বলে স্থানীয়রা বলছেন। এরপরই শোরগোল পড়ে যায়। এরপর মঙ্গলবার রাত আটটা নাগাদ ভারতের আকাশে চারটি ড্রোন উড়তে দেখা যায় একই জায়গাতে। সঙ্গে ছিল বিকট আওয়াজও। আর যখন ড্রোন উঠছিল সেই সময়ের ঘটনাস্থলে ছিল পুলিসের বিশাল বাহিনীও। প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের অনুমান,‘স্টারলিঙ্কে’র ড্রোনগুলি মূলত ‘রিয়েল টাইম লোকেশন’ জানার জন্যই ব্যবহার করা হয়। তবে সেটা এ রাজ্যের সীমান্ত অংশের নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট আশঙ্কার। এর থেকে প্রাপ্ত তথ্য একমাত্র মেইন সার্ভারেই জমা হয়। বাইরে বের হয় না। চূড়ান্ত গোপন থাকে সব রিপোর্ট। স্টারলিঙ্ক স্যাটেলাইট সংযোগের কাজ করে। দূর্গম যে কোনও স্থান থেকে অন্য কোনও কম্পিউটারের সঙ্গে ইন্টারনেট যোগাযোগ করতে হলে, প্রথমে স্টারলিঙ্ক গ্রাহকের কম্পিউটার থেকে রিকোয়েস্ট কাছাকাছি স্যাটেলাইটে যায়। এরপর সেই রিকোয়েস্ট সেলুলার নেটওয়ার্কের মতো একটা থেকে অন্য স্যাটেলাইট হয়ে নির্দিষ্ট সার্ভারে পৌঁছয়। এরপর সেই তথ্য নিয়ে একই পদ্ধতিতে গ্রাহকের কম্পিউটারে ফিরে আসে। পৃথিবীর যে কোনও স্থানে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়। এমনকী দুর্গম পাহাড় বা জঙ্গলেও ইন্টারনেট সংযোগ মেলে স্টারলিঙ্কের মাধ্যমে। কয়েকমাস আগে মার্কিন ধনকুবের এলেন মাস্কের কাছ থেকে এই প্রযুক্তি কিনেছে বাংলাদেশ সরকার। এগুলি রয়েছে বাংলাদেশের সেনা ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) হেফাজতে। স্বাভাবিকভাবে ভারতের সীমান্তে কেন এই ধরনের ড্রোন ওড়ানো হল, তা নিয়েই রহস্য দানা বাঁধছে। এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা রাজেশ লস্কর বলেন, ৮টা নাগাদ হঠাৎই কাটাখালি ব্রিজ এলাকায় ড্রোনগুলি দেখা যায়। সাধারণ মানুষ বাড়ি থেকে বের হয়ে তা দেখতে শুরু করেন। এটা পুরোটাই বাংলাদেশের চক্রান্ত। আমরা খুবই আতঙ্কিত। বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভবনা করুক প্রশাসন। এ নিয়ে বসিরহাট পুলিস জেলার সুপার হোসেন মেহেদি রহমান বলেন, সম্ভবত এটা এলেন মাস্কের স্টারলিঙ্কের ড্রোন। যখন এগুলি উড়ছিল, তখন পুলিস ঘটনাস্থলেই ছিল। খুব একটা উঁচুতে উড়ছিল এমনটা নয়। তবে বিষয়টি আমরা বিএসএফের সঙ্গে আলোচনা করে খতিয়ে দেখছি।