নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বাঁ দিকের শ্বাসনালীতে বিঁধে ছিল বোর্ড পিন। তা থেকে অনবরত রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। সঙ্গে লাগাতার কাশি ও বুকে ব্যথা। এই অবস্থাতেই প্রায় ৭২ ঘণ্টা ছিল ওই কিশোর। ফলে ক্ষতির পরিমাণ বেড়েই যাচ্ছিল। বাঁ দিকের ফুসফুসে বাসা বেঁধেছিল নিউমোনিয়া। এই সঙ্কট থেকে অঙ্কন বিশ্বাস নামের ওই কিশোরকে অনেকটাই বের করেঅআনতে সক্ষম হয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইএনটি বিভাগ। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অপারেশন করে শ্বাসনালী থেকে বোর্ড পিনটি বের করে আনা হলেও স্বরূপনগরের বাসিন্দা ওই কিশোর এখনও সম্পূর্ণ বিপন্মুক্ত নয়। স্থিতিশীল হতে আরও ৪৮-৭২ ঘণ্টা লাগতে পারে। ছেলেটির প্রাণ সংশয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তাই তাকে পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিকু) ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রাখতে হয়েছে।
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের খবর, অঙ্কনের বাড়ির লোকজন জানিয়েছেন, তিন-চারদিন আগে ছেলে হঠাৎ বুকে ব্যথার কথা বলে। সঙ্গে কাশি ও শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। স্থানীয় চিকিৎসককে দেখালে তিনি ওষুধপত্র দেন। কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হয়নি। কষ্ট বাড়লে অঙ্কনকে নিয়ে তাঁরা বসিরহাটের সরকারি হাসপাতালে যান। এক্স-রে’তে দেখা যায়, শ্বাসনালীর বাঁদিকে একটি পিন গেঁথে রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়।
২৬ মে ভোররাতে মেডিক্যালের ইএনটি বিভাগে ভর্তি করা হয় অঙ্কনকে। চিকিৎসকরা সিটি স্ক্যান করালে দেখা যায়, বাঁদিকের শ্বাসনালীতে পিন বিঁধে আছে। শুধু তাই নয়, বাঁদিকের ফুসফুসও চুপসে গিয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ অস্ত্রোপচার শুরু হয়। বেলা ১২টা নাগাদ ব্রঙ্কোস্কপি দিয়ে বহু চেষ্টায় বের করে আনা হয় পিনটি। কিন্তু শ্বাসনালীর রক্তক্ষরণ এবং নিউমোনিয়া থাকায় রোগীকে ওটি থেকে তড়িঘড়ি পাঠানো হয় পিকুতে। মেডিক্যালের ইএনটি’র সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ দীপ্তাংশু মুখোপাধ্যায় বলেন, অ্যানাস্থেসিয়া টিম অসম্ভব ভালো কাজ করেছে। তাই বড়সড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে। যেভাবে পিনটি গেঁথে ছিল, তা বের করা কঠিন ছিল। অঙ্কনকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে বাড়ি পাঠানোই এখন আমাদের উদ্দেশ্য।