ঝড়-জলে মাঝরাস্তায় ঘটে যেতে পারে যা কিছু, দুর্যোগ এগিয়ে আসতেই তড়িঘড়ি বৈঠকে রেলের এই ডিভিশন
আজকাল | ২৯ মে ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: সোমবার জন্ম নিয়েছে নিম্নচাপ। হাওয়া অফিসের তথ্য, আগামী ২৪ ঘণ্টায় এই নিম্নচাপ আরও শক্তি বাড়িয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। যার জেরে অতি প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে বাংলায়। ৩১ মে, শনিবার পর্যন্ত সমুদ্রে যেতে মৎস্যজীবীদের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, বুধ, বৃহস্পতি, শুক্র শনি জেলায় জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। জারি সতর্কতা। এর মধ্যেই বঙ্গে ঢুকবে বর্ষা। প্রায় ১৬ বছর পর, সমতের দিন কয়েক আগেই কেরলে বর্ষা প্রবেশ করেছে।
বঙ্গে বর্ষা ঢুকলেই, টানা ঝড়-জলে একেবারে নাজেহাল অবস্থা। কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা কীভাবে? হাতে সময় থাকতেই শিয়ালদহ ডিভিশন তৈরি করে ফেলেছে নিজেদের মনসুন প্ল্যান। ২৮ মে-র বৈঠকে শিয়ালদহ ডিভিশন যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং ট্রেন পরিষেবা মসৃণ করার জন্য বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে-
সম্ভাব্য বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রভাব কমাতে সকল গুরুত্বপূর্ণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে কৌশলগতভাবে ডিজি সেট স্থাপন করা হয়েছে। রেললাইনে জল জমে থাকা রোধ করতে এবং ভারী বৃষ্টিপাতের ক্ষেত্রে দ্রুত জল সরিয়ে নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক জল পাম্প স্থাপন করা হয়েছে, যাতে প্রতিকূল আবহাওয়াতেও রেলওয়ে অবকাঠামো কার্যকর থাকে।
এমারজেন্সি কন্ট্রোল কার্যকর থাকবে সর্বক্ষণ। মুষলধারে বৃষ্টিপাতের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য সেখানে কর্মকর্তাদের মোতায়েন করা হবে। পরিস্থিতি তদারকির জন্য অপারেটিং, ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল, সিগন্যাল এবং টেলিকম বিভাগের মতো বিভিন্ন শাখার বিশেষজ্ঞ কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মোতায়েন করবে রেল।
সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য রেলওয়ে সুরক্ষা বাহিনী (RPF) সর্বক্ষণ সতর্ক থাকবে।
সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে বৈদ্যুতিক, প্রকৌশল এবং সিগন্যাল ও টেলিকম সরঞ্জামের যথাযথ সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।
প্রবল বর্ষণের কারণে মাঝে মাঝেই লক্ষ্যনীয় ট্র্যাক ফেইলিওর। গত অর্থবর্ষে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত এবং জল জমে থাকার কারণে শিয়ালদহ বিভাগে ৫৪টি ত্রুটির খবর পাওয়া গিয়েছিল। পয়েন্ট এবং ট্র্যাক সার্কুলেশন এলাকায় জল জমে থাকা এড়াতে ড্রেনেজ ব্যবস্থার ব্যবস্থা এবং পরিষ্কার করাকে অগ্রাধিকার দেবে।
ক্যানিং এবং ডায়মন্ড হারবারের মতো ঘূর্ণিঝড়প্রবণ অঞ্চলের উপর বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হবে। জরুরি পরিস্থিতি এড়াতে সমস্ত ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বর্ষাকালীন টহল দেবেন কর্মীরা।
বজ্রপাত বা ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার সম্ভাবনা এড়াতে কাঁচরাপাড়া, রানাঘাট, বহরমপুর, ব্যারাকপুর ইত্যাদি বিভাগে জরুরি ভিত্তিতে গাছ কাটা হচ্ছে।
বর্ষাকালে যাত্রীদের সুরক্ষার জন্য বিভাগের ২০৪টি স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম শেড যথাযথ অবস্থায় রাখার নির্দেশ।
পরিস্থিতি কতটা গুরুতর, তা মূল্যায়নের জন্য প্রকৃত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ পরিমাপ করতে সোনারপুর, বারাসত, বনগাঁ, রানাঘাট এবং ব্যারাকপুরের মতো ৫টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বৃষ্টিপাত পরিমাপক যন্ত্র স্থাপন করেছে।
বাতাসের গতি এবং দিক পরিমাপ করার জন্য নামখানা, ডায়মন্ড হারবার, কৃষ্ণনগর, ব্যারাকপুর, বারাসত ইত্যাদি ৯টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে অ্যানিমোমিটার যন্ত্র স্থাপন করেছে রেল।