• ঠিকাদারি সংস্থার বিরুদ্ধে সরব স্থানীয়রা, রেলিংহীন নির্মীয়মাণ সেতু থেকে পড়ে মৃত্যু সাইকেল আরোহীর
    বর্তমান | ২৯ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা,  কুমারগঞ্জ ও  বালুরঘাট: ভাগ্নি জামাইয়ের মায়ের সত্কার সেরে রাতে ফেরার পথে রেলিংহীন সেতু থেকে পড়ে মৃত্যু হল এক সাইকেল আরোহীর। মৃতের নাম সুশীলচন্দ্র দাস (৫৯)। 

    মর্মান্তিক এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার উত্তেজনা ছড়ায় কুমারগঞ্জের মাধবপুরে। পুলিস দেহ উদ্ধার করতে এলে বাধা দেয় স্থানীয়রা। তাঁরা ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। পরে কুমারগঞ্জ থানার আইসি রামপ্রসাদ চাকলাদারের নেতৃত্বে বিশাল পুলিস বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

    প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলা পরিষদের মাধ্যমে কুমারগঞ্জের পিরোজপুর থেকে মমিনপুর ও মতিজাপুর পর্যন্ত প্রায় ১০ কিমি রাস্তা তৈরি হচ্ছিল। এজন্য বরাদ্দ হয় ৫ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা। চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে রাস্তার কাজ চলছিল। 

    স্থানীয়দের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার অধীনে রাস্তায় সেতু নির্মাণ হচ্ছিল। নির্মীয়মাণ সেই সেতু থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে সাইকেল আরোহী সুশীলের। অভিযোগ, নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থা না করেই সেখানে কাজ চলছিল। নির্মীয়মাণ সংস্থার গাফিলতির জেরেই মৃত্যু। যদিও যথেষ্ট নিরাপত্তা ছিল বলে দাবি সংস্থার। পুরো ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রাস্তা নির্মাণকারী প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনার স্টেট রুরাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি।  সেখানকার এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রবীন্দ্র সরকার বলেন, আমরা সমস্ত গাইডলাইন বুঝিয়ে দিয়ে সংস্থাকে কাজের দায়িত্বভার দিই। পরবর্তীতে ওই সংস্থা কাজ করেছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল কি না, তা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তে গাফিলতি উঠে এলে নির্মীয়মাণ সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    বাবাকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ ছেলে সুদর্শন দাস। তিনি বলেন, মঙ্গলবার আমাদের এক আত্মীয়ের সত্কার্য করতে বাবা দামোদরপুর গিয়েছিলেন। ফেরার পথে এই ঘটনা। রাতে বা঩ড়ি না ফেরায় আমাদের চিন্তা হয়। ওখানে ফোন করে জানতে পারি, বাবা রাতেই বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। আজ সকালে ব্রিজের নীচে বাবাকে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা আমাদের খবর দেন।  

    মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ঠিকাদারের গাফিলতির জেরেই এই মর্মান্তিক মৃত্যু। গ্রামবাসীরাও এই মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য নির্মাণকারী সংস্থাকে দায়ী করেছেন।

    মৃতের ছেলে বলেন, নির্মায়মাণ সেতুতে কোনও ব্যারিকেড ছিল না। ঠিকাদার সংস্থার কর্ণধার উজ্জ্বল সরকারের দাবি, বাঁশের ব্যারিকেড দেওয়া ছিল। যাতে কেউ পড়ে না যান, মাটিও ঢিবির মতো করে রাখা ছিল। । 

    এবিষয়ে কুমারগঞ্জ থানার আইসি বলেন, সেতুটি ঘেরা না থাকায় পড়ে গিয়েছে। আমরা সেতু ঘিরে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। মৃতের পরিবার এখনও অভিযোগ করেনি। তবে পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)