• আজ আলিপুরদুয়ারে সভা প্রধানমন্ত্রীর, কী বার্তা দেবেন? তাকিয়ে উত্তরবঙ্গবাসী
    বর্তমান | ২৯ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: ১৯৮৬ সালে আলিপুরদুয়ার শহরে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। ৩৯ বছর পর আজ, বৃহস্পতিবার শহরে আসছেন আরও এক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শহরের প্যারেড গ্রাউন্ডে জনসভা করবেন তিনি (এর আগে ২০১৬ সালে জনসভা করেছিলেন বীরপাড়ায়)।  তার আগে একাধিক সরকারি প্রকল্পের শিলান্যাস করার কথা। ২৪ ঘণ্টা আগে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সভার জন্য সমস্ত আয়োজন সম্পূর্ণ করে ফেলা হয়। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপ (এসপিজি) দু’দিন আগেই প্যারেড গ্রাউন্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। মঙ্গলবার হেলিকপ্টার চক্কর দিয়ে গিয়েছে শহর ও প্যারেড গ্রাউন্ড। 

    ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর পর প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসবাদ ও পাকিস্তান নিয়ে নতুন কী বার্তা দেন, তা জানতে মুখিয়ে সাধারণ মানুষ। আবার চিকেনস নেক ও অনুপ্রবেশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কী বার্তা দেন, সেদিকেও সবার নজর থাকবে।

    ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বীরপাড়ায় জনসভা করে গিয়েছেন। সেবার প্রধানমন্ত্রী মাদারিহাটের বন্ধ চা বাগান অধিগ্রহণ করে খুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু বাগান খোলেনি। রাজ্য সরকারই উদ্যোগী হয়ে জেলায় বন্ধ একের পর এক বাগান খোলার ব্যবস্থা করেছে। 

    আবার, চা শিল্পের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষিত এক হাজার কোটি টাকা কোথায় গেল, আজ পর্যন্ত তা কেউ জানতেই পারল না। ফলে আজকের সভা থেকে চা বাগান নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ফের কোনও বার্তা দেন কি না, তা নিয়েও আগ্রহ তুঙ্গে। 

    এদিকে, চা বলয় আলিপুরদুয়ারে যে কোনও ভোটে নির্ণায়ক হয়ে ওঠেন চা শ্রমিকরাই। তাঁদের ভোট পেয়েই অতীতে আলিপুরদুয়ারে লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে বাজিমাত করেছিল বিজেপি। কিন্তু চা বাগানের সেই শ্রমিকরাই বর্তমানে বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। সেই ভোটব্যাঙ্ক ফেরাতে প্রধানমন্ত্রী কোনও দিশার কথা বলেন কি না, তা নিয়েও চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে। সব মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সভায় ‘বঞ্চিত’ চা শ্রমিকদের উপস্থিতি কতটা থাকে, সেদিকেও নজর রাজনৈতিক মহলের। 

    তবে এই মুহূর্তে আলিপুরদুয়ারের মানুষের প্রধান দাবি, হাসিমারায় অসামরিক বিমানবন্দর ও আলিপুরদুয়ার রেল জংশনে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। প্রতিশ্রুতি দিয়েও প্রস্তাবিত এই দু’টি কেন্দ্রীয় প্রকল্প আজও বাস্তবায়িত হয়নি। তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভে ফুঁসছেন জেলার মানুষ। এবার এই দু’টি প্রকল্প নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কী বার্তা দেন, তা জানতেও অধীর আগ্রহ জেলাবাসীর। 

    তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক মৃদুল গোস্বামী বলেন, আমরা নিশ্চিত প্রধানমন্ত্রীর সভায় চা শ্রমিকরা যাবেন না। সভার পরেই বিজেপি সেটা টের পাবে। প্রতিশ্রুতি দিয়েও বন্ধ বাগান কেন খুলল না, প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চায় আলিপুরদুয়ারের মানুষ।

    যদিও বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গার মন্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর জনসভা নিয়ে উত্তরবঙ্গজুড়ে উন্মাদনা শুরু হয়েছে। সভায় লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশ হবে। চা শ্রমিকদের ভিড় উপচে পড়বে। সভা দেখে তৃণমূল সেটা টের পাবে।
  • Link to this news (বর্তমান)