• ‘চন্দন দস্যু’দের ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছেন মেমারির বাসিন্দারা, এলাকা থেকে সাফ হয়ে যাচ্ছে মূল্যবান গাছ
    বর্তমান | ২৯ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: ‘ডন কো পাকড়না মুশকিল হি নেহি, না মুমকিন হ্যাঁয়’— জনপ্রিয় হিন্দি সিনেমার এই সংলাপ এখন মেমারিতে মুখে মুখে ঘুরছে। সৌজন্যে চন্দন দস্যুরা। তারা পুলিসকে কার্যত বোকা বানিয়ে একের পর এক চন্দন গাছ উধাও করে দিচ্ছে। এলাকার বাসিন্দারা সচেতন রয়েছে। থানায় একাধিক অভিযোগ হয়েছে। বনদপ্তরকেও সতর্ক করা হয়েছে। তারপরও চন্দন দস্যুদের দাপট বন্ধ করা যায়নি। ধরা পড়েনি একজনও। কলনবগ্রাম থেকে পর পর চারটি গাছ তারা কেটে নিয়ে চলে গিয়েছে। এই এলাকার আরও অনেকের বাড়িতে চন্দনগাছ রয়েছে। তাঁরা আতঙ্কে রয়েছেন। গাছ বাঁচাতে তাঁরা রাত পাহারা দিতে শুরু করেছেন। পুলিস এবং বনদপ্তরের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন।

    স্থানীয়রা বলেন, দুষ্কৃতীরা গাছ কাটলেও কেউ টের পাচ্ছে না। বিশেষ কোনও মেশিনের মাধ্যমে তারা গাছ কাটছে। অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গেই কাটা হচ্ছে গাছ। সেই কারণেই কেউ টের পাচ্ছে না। এলাকারই কেউ না কেউ সহযোগিতা করছে। তাছাড়া দুষ্কৃতীরা এত নিখুঁত ‘অপারেশন’ করতে পারত না। দস্যুরা প্রথমে কলানবগ্রামে একটি কলেজ থেকে দু’টি গাছ কাটে। পরে ওই এলাকায় রাস্তার পাশে থাকা আরও একটি গাছ তারা কেটে নেয়। কয়েকদিন আগে কলানবগ্রামেই রাস্তার পাশের আরও একটি গাছ তারা কাটে। এলাকার বাসিন্দা সন্দীপ সরকার বলেন, যাঁদের বাড়িতে চন্দন গাছ রয়েছে তাঁরা সকলেই আতঙ্কে রয়েছেন। যে কলেজ থেকে সর্বপ্রথম চন্দন গাছ কাটা হয়, সেখানে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন ছিল, কর্মীরাও থাকতেন। তারপরও দুষ্কৃতীরা দু’টি গাছ কেটে নেয়। কেউ টের পায়নি। দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। স্থানীয় আরেক বাসিন্দা বলেন, অনেক গ্রামের বাসিন্দারাই এখন রাতে জেগে থাকছেন। বাইরের কাউকে সচরাচর এলাকায় ঘুরতেও দেখা যাচ্ছে না। তারপরও কীভাবে দুষ্কৃতীরা গাছ কেটে উধাও করছে তা টের পাওয়া যাচ্ছে না। একটা গাছ কাটতে বেশ কিছক্ষুণ সময় লাগে। কাটার শব্দও হয়। সেসব কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে জেলায় চন্দন গাছ রোপণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেইসব রোপণ করা গাছ বড় হয়েছে। মেমারি ছাড়া অন্যান্য এলাকাতেও চন্দন গাছ রয়েছে। দস্যুদের গ্রেপ্তার করতে না পারলে তারা ওইসব গাছগুলিও হাপিশ করে দেবে। এডিএফও সৌগত মুখোপাধ্যায় বলেন, ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। বিষয়টি পুলিসকেও জানানো হয়েছে। কোথাও গাছ কাটার অভিযোগ পাওয়া গেলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ করি। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীদের এখনও চিহ্নিত করা যায়নি। এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, দস্যুরা শুধু চন্দনগাছই টার্গেট করছে। একই জায়গায় অন্য গাছ থাকলেও সেগুলি কাটছে না। কোথায় কোথায় চন্দন গাছ রয়েছে সেই তথ্য তাদের কাছে কেউ না কেউ পৌঁছে দিচ্ছে।  প্রতীকী চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)