ঝাড়গ্রামে কংসাবতী নদীর পাড় বাঁধানোর কাজে ২৩ কোটি বরাদ্দ
বর্তমান | ২৯ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: বন্যা নিয়ন্ত্রণে ঝাড়গ্রামে কংসাবতী নদীর পাড় বাঁধানোর কাজ চলছে। এই কাজের জন্য নতুন করে ২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। বর্ষার পর পাড় বাঁধানোর কাজ শুরু হবে। এতে বন্যাকবলিত জেলার উত্তর অংশের বাসিন্দারা উপকৃত হবেন। ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল বলেন, কংসাবতী নদীর পাড় বাঁধানোর কাজে অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। সুবর্ণরেখা নদীর কিছু অংশেও পাড় বাঁধানো হবে। বর্ষার পর কাজ শুরু হবে।
বিনপুর-১ ব্লকের কংসাবতী নদী তীরবর্তী প্রায় ১৮২৫ মিটার পাড় বাঁধানোর কাজ চলছে। প্রথম পর্বে নদীর ভাঙন রোধে ছ’কোটি ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। বৈতা পঞ্চায়েত এলাকায় পাড় বাঁধানোর কাজ শেষের দিকে। বিনপুর ছাড়াও ঝাড়গ্রাম ব্লকের মানিকপাড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় এবার পাড় বাঁধানোর কাজ হবে। বর্ষার পর দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হবে।
বিনপুর-১ ব্লকের দক্ষিণদিক দিয়ে কংসাবতী নদী বয়ে যাচ্ছে। বহু বছর ধরে বর্ষায় এলাকার কৃষিজমি ও জনবসতি এলাকা প্লাবিত হতো। জেলার উত্তর অংশে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ বন্যা বিপর্যয়ের শিকার হতেন। নদী ভাঙনের জেরে বিঘার পর বিঘা কৃষিজমি তলিয়ে যেত। জমি হারিয়ে এলাকার বহু মানুষ সর্বস্বান্ত হয়েছে। বৈতা পঞ্চায়েতের যশপুর, নয়াপাল বালিশিরা, বৈতা এলাকার জনবসতি এলাকা তলিয়ে যাবার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এলাকার বাসিন্দারা অন্যত্র চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বন্যার দুর্ভোগ পাহাতে হয় রামজীবনপুর, ফিরিঙ্গিটোলা, টিকারামপুর, কাঞ্চননগর বাঁশকোনা পায়রাগুড়ি, শালচাতুরি এলাকার নদী সংলগ্ন এলাকার মানুষকেও। বছরের পর বছর এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছিলেন। পাড় বাঁধানোর দাবি তুলেছিলেন তাঁরা। বৈতা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তারকা চালক বলেন, পাড় বাঁধানোয় বর্ষায় বন্যার মুখে পড়তে হবে না। পাড় বাঁধানোর জেরে বসতি এলাকা তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমে গিয়েছে। স্থানীয় মানুষ এবার নিশ্চিন্তে দিনযাপন করতে পারবেন। বালিশিরা গ্ৰামের বাসিন্দা সঞ্জয় চালক বলেন, ছোট থেকে নদীর গ্ৰাসে কৃষিজমি তলিয়ে যেতে দেখেছি। গরিব মানুষ চাষি থেকে দিনমজুর হয়েছে। বসতভিটে হারানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হয়েছে। বর্তমান সরকার এই এলাকার মানুষের কথা ভেবেছেন। বন্যা ও ভাঙনের আতঙ্ক এবার আমাদের দিন কাটতে হবে না।-নিজস্ব চিত্র