• বাংলাদেশি সন্দেহে আটক ১০ শ্রমিক, অসমের ডিটনেশন ক্যাম্প থেকে মুক্ত
    বর্তমান | ২৯ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: অসমের ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ফরাক্কার দশ শ্রমিককে। বুধবার সকালে তাঁরা ছাড়া পান। শ্রমিকদের অভিযোগ, কোনও কারণ ছাড়াই তাদের আটকে রাখা হয়েছিল। মুর্শিদাবাদের লোক ও বাঙালি বুঝতে পেরেই বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হয় বলে শ্রমিকদের দাবি। দীর্ঘ হয়রানির পর শ্রমিকদের পরিচয় পত্র ও প্রয়োজনীয় নথি দেখে তাঁদের ছাড়া হয়। আতঙ্কিত শ্রমিকদের কয়েকজন ইতিমধ্যেই ঘরে ফিরে এসেছেন। বাকিরাও ফিরে আসছেন বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। আতঙ্কিত শ্রমিকরা আর সেখানে কাজে যেতে নারাজ।

    এ প্রসঙ্গে ফরাক্কার বিধায়ক মনিরুল ইসলাম বলেন, অসমে বাঙালি ও সংখ্যালঘু জানতে পারলেই আটক করা হচ্ছে। এভাবে শ্রমিকদের হয়রানি করা ঠিক হচ্ছে না। বিষয়টি জানতে পেরে পুলিস আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলি। প্রয়োজনীয় নথিও পাঠানো হয়। শেষ পর্যন্ত শ্রমিকদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা ফিরে আসছেন।

    গত রবিবার সন্ধ্যায় ১৬ জন শ্রমিককে নুমলিগড় থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর চারজনকে ও গভীর রাতে আরও দুই শ্রমিককে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি দশ শ্রমিককে থানায় আটকে রাখা হয়। পরদিন দশ শ্রমিককে গোলাঘাট জেলার গোয়ালপাড়া ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হয়। শ্রমিকরা কোম্পানির ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। শ্রমিকদের খোঁজও নেয়নি কোম্পানির লোকজন। ছাড়া পাওয়া ছয় শ্রমিক আটক শ্রমিকদের পরিবারে খবর দেন। শ্রমিকদের বাড়ির লোকজন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তাঁরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিষয়টি জানান। জনপ্রতিনিধিরা বিষয়টি জঙ্গিপুর জেলা পুলিসের নজরে আনেন। পুলিস শ্রমিকদের পরিচয়পত্র ও প্রয়োজনীয় নথি স্থানীয় প্রশাসনকে পাঠায়। মঙ্গলবার রাতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাওয়ার পরই শ্রমিকদের ছেড়ে দেওয়ার কথা জানানো হয়। এদিন সকালে তাদের ছাড়া হয়। শ্রমিকদের ছেড়ে দেওয়া হলেও আধার কার্ড ও মোবাইল পরে ফেরত দেওয়া হবে জানানো হয়। সেগুলো হাতে না পাওয়ায় পর্যন্ত ঘরে ফিরতে পারছেন না শ্রমিকরা। আব্দুস সাত্তার ও শাহবাজ হাসমি ফোনে সহকর্মীদের জানান, আপাতত ভাড়া বাড়িতে রয়েছেন। আধার কার্ড ও মোবাইল দেওয়া হয়নি। বিকেলে থানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। সেগুলো পেলেই তাঁরা বাড়ি ফিরবেন।

    এদিকে এদিন সকালেই ফরাক্কায় ফেরেন ছয় শ্রমিক। তাঁদেরই একজন আব্দুল হাকিম বলেন, সামনেই ঈদ। এই সময়ে একটা তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরতে হল। ওদের সঙ্গেও ফোনে কথা হয়েছে। যতক্ষণ না বাড়িতে ফিরে আসছে নিশ্চিত হতে পারছি না। সেখানে আপাতত আর কাজে যাচ্ছি না, আগামীদিনে যাব কি না, পরে ভেবে দেখব।(অসমের ডিটেনশন ক্যাম্প। প্রতীকী ছবি)
  • Link to this news (বর্তমান)