• গোঘাটের সমবায়ে ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা তছরুপ, গ্রেপ্তার অস্থায়ী কর্মী
    বর্তমান | ২৯ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: গোঘাটের নকুণ্ডা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির পূর্বতন পরিচালন কমিটির ম্যানেজার সহ কর্মীদের বিরুদ্ধে দেড় কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনায় বুধবার ভোরে সমবায় সমিতির এক অস্থায়ী কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে গোঘাট থানার পুলিস। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতের নাম সোমা পাল। তার বাড়ি নকুণ্ডা এলাকাতেই। ধৃতকে এদিন পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে ওই সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির সহ কোষাধ্যক্ষ পদে ছিল। এদিন তাকে আরামবাগ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক পাঁচ দিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেন। 

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর এই সমবায়ের চারজনের বিরুদ্ধে গোঘাট থানায় আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগ জানান তৎকালীন পরিচালন বোর্ডের সম্পাদক নকুন্ডার বাসিন্দা তপন ঘোষ। তার ভিত্তিতে তদন্ত করে আপাতত দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দিন কয়েক আগে এই সমবায়ের কোষাধ্যক্ষ লক্ষ্মণ মালিককে গ্রেপ্তার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল পুলিস। বর্তমানে সে ১০ দিনের পুলিস হেফাজতে রয়েছে। এদিন সোমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দু’জনের নামই অভিযোগপত্রে রয়েছে। তবে ওই সমবায়ের প্রাক্তন ম্যানেজার বিশ্বজিৎ মালিক এখনও পলাতক। তার খোঁজে পুলিস তল্লাশি চালাচ্ছে। 

    অভিযোগকারী বলেন, পরিচালন বোর্ডে এসে দেখা যায়, বিগত বছরগুলিতে সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির কোনও অডিট হয়নি। জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়ে অডিট করা হয়। ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যেই দেড় কোটি টাকার কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি। তার জেরে জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়ে থানায় অভিযোগ জানানো হয়। আমরা চাই, অভিযুক্তদের শাস্তি হোক। পাশাপাশি গরিব মানুষের তছরুপ হওয়া টাকা উদ্ধার করে তা ফিরিয়ে দেওয়া হোক।

    অভিযোগকারী জানিয়েছেন, সেই সময় ওই সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে ভুয়ো লেনদেনের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। গ্রাহকরা টাকা জমা দেওয়ার পর তাঁদের খাতায় লেনদেনের কথা উল্লেখ করা হয়। কিন্তু, সমিতিতে কোনও হিসেব রাখা হয়নি। এছাড়া স্বনির্ভর গোষ্ঠী সহ বিভিন্ন ব্যক্তির নামে ভুয়ো ঋণ দেখিয়ে টাকা লোপাট করে নেওয়া হয়েছে। অডিট রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর অভিযোগ জানানো হয়। তবে এমন আর্থিক তছরুপের ঘটনায় তৎকালীন সময়ে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।

    হুগলি জেলা পরিষদের কৃষি, সেচ ও সমবায় স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মদনমোহন কোলে বলেন, অনিয়মের অভিযোগে কোনও আপোস নয়। আইন আইনের পথে চলবে। 

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার তদন্তে দেড় কোটিরও বেশি টাকার তছরুপের আশঙ্কা রয়েছে। সমস্ত নথিপত্র খতিয়ে দেখছেন পুলিস আধিকারিকরা। অনেক নথি আবার সরিয়েও ফেলা হয়েছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সেগুলি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
  • Link to this news (বর্তমান)