নিম্নচাপ ও কোটালের জোড়া ফোলা, বাড়ল নদীর জলস্তর, সুন্দরবনের নদী বাঁধ ভেঙে বিপত্তি...
আজকাল | ২৯ মে ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হওয়া নিম্নচাপ এবং অমাবস্যা কোটালের জোড়া ফালায় সুন্দরবনের উপকূলবর্তী এলাকার একাধিক জায়গায় নদী বাঁধ ভেঙে ঘটলো বিপত্তি। প্রবল জলোচ্ছ্বাসের কারণে সুন্দরবনের একাধিক উপকূলবর্তী এলাকায় বাঁধ উপছে এলাকায় ঢুকলো নদীর নোনা জল।
নিম্নচাপের জেরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী এলাকায় বেশ কয়েকদিন ধরেই চলছে বৃষ্টির ঝোড়ো ইনিংস। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ঝোড়ো হাওয়ার দাপট। সঙ্গে দোসর অমাবস্যা কোটাল। সাগরদ্বীপের উপকূলবর্তী এলাকায় একাধিক জায়গায় নদীর বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। নদীর বাঁধে ফাটল দেখা দেওয়ার কারণে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসীরা।
সাগরদ্বীপের কয়ালপাড়া এলাকায় নদীর বাঁধে ফাটল। এছাড়াও গঙ্গাসাগরের দেবী মথুরা ও বেগুয়াখালি, কলোনি পাড়া, কশতলা, মহিষামারি ও রায়দিঘির কুমড়ো পাড়া এলাকায় মনি নদীর নদী বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। এছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা ও ফ্রেজারগঞ্জ এলাকার একাধিক জায়গায় নদী বাঁধ উপছে এলাকায় প্রবেশ করেছে নদীর নোনা জল।
এলাকাবাসীদের দাবি, তড়িঘড়ি ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে মাটির নদী বাঁধগুলি অবিলম্বে মেরামতির কাজ না শুরু করলে বড়সড় বিপদ ঘনিয়ে আসছে দ্বীপের বাসিন্দাদের জন্য। ঘোড়ামারা দ্বীপের একাধিক মাটির নদী বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসীদের দাবি অবিলম্বে স্থায়ী কংক্রিটের নদী বাঁধ নির্মাণ করুক ব্লক প্রশাসন।
প্রতিবারই মাটির নদী বাঁধ ভেঙে গিয়ে এলাকায় প্রবেশ করে নদীর নোনা জল। এর ফলে জমির ফসল থেকে শুরু করে ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গঙ্গাসাগরের মহিষামারি ও বেগুয়াখালি এলাকায় বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে মাটির নদী বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকার মানুষদের নিরাপদ আশ্রয় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে যে সকল জায়গায় মাটির নদী বাঁধ ভেঙে গিয়েছে, সে সকল জায়গায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মাটির নদী বাঁধ মেরামত করার কাজ চালানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, বিস্তীর্ণ সাগরদ্বীপের একাধিক জায়গায় মাটির নদী বাঁধ রয়েছে। মাটির নদী বাঁধ সাগরের রুদ্র রূপের সামনে এলাকাবাসীদের রক্ষা করার জন্য বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে পারে না। নিম্নচাপের টানা বৃষ্টি আর তার জেরে নদীর বাঁধের মাটি ধুয়ে গিয়েছে এবং দুর্বল হয়ে গিয়েছে। নদীর ঢেউয়ে ভেঙে গিয়েছে নদী বাঁধ।
এই এলাকায় স্থায়ী কংক্রিটের নদী বাঁধ না হলে এই নদী ভাঙন রোধ করা যাবে না। এ বিষয় সাগরের বিডিও কানাইয়া কুমার রাও জানান, নিম্নচাপ ও অমাবস্যার কোটালে কারণে নদীর জলস্তর বেড়েছে এবং জলোচ্ছ্বাস হয়ে গঙ্গাসাগরের বেশ কিছু জায়গায় নদীর বাঁধ উপছে এলাকায় নদীর জল ঢুকেছিল। বাঁধের কাছাকাছি ঘনবসতি না থাকার কারণে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সাগরের যে সকল জায়গায় নদী বাঁধের বেহাল অবস্থা হয়ে গিয়েছে সে সকল জায়গায় ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত তার সাথে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে মেরামত করার কাজ শুরু করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিগতিক হলে উপকূলবর্তী এলাকাবাসীদের নিরাপদ আশ্রয় নিয়ে আসার জন্য ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বেহাল নদী বাঁধ সংলগ্ন এলাকায় খোলা হয়েছে ত্রাণ শিবির। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সমস্ত রকম বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুত ব্লক প্রশাসন।