রাজ্যের সব দপ্তর মিলিয়ে মোট কতজন মহার্ঘভাতা (ডিএ) প্রাপক রয়েছেন তার হিসাব চেয়েছে রাজ্যের অর্থ দপ্তর। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মোট বকেয়া ডিএ–র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে নবান্ন। সম্প্রতি এই হিসাব সব দপ্তরের কাছ থেকে চেয়ে পাঠিয়েছে অর্থ দপ্তর।
রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তর মিলিয়ে প্রায় আড়াই লক্ষের কিছু বেশি কর্মচারী কাজ করেন। পাশাপাশি রাজ্যে স্কুলশিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষ ৮০ হাজার। এছাড়াও বিভিন্ন পঞ্চায়েত, পুরসভা, পুরনিগম-সহ সরকারপোষিত স্বশাসিত সংস্থায় লক্ষাধিক কর্মচারি কর্মরত রয়েছেন। বহু অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী ও পেনশনপ্রাপকরাও ডিএ পাওয়ার যোগ্য। অর্থাৎ সব মিলিয়ে মোট সংখ্যাটা দাঁড়াচ্ছে প্রায় ১০ লক্ষের কাছাকাছি। সুপ্রিম কোর্টের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তাঁদের বকেয়া ডিএ–র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দিতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন পঞ্চম বেতন কমিশনের অধীনে জারি হওয়া রোপার মেয়াদ ২০১৯ সালে শেষ হয়ে গিয়েছে। সেই কারণে ২০১৯ সালের পরে রাজ্যে সরকারি চাকরিপ্রাপ্ত কোনও কর্মচারী এই ২৫ শতাংশ ডিএ পাবেন না। যাঁরা ২০০৯ সাল থেকে সরকারি চাকরিতে কর্মরত বা তার আগে থেকে কর্মরত ছিলেন শুধু তাঁরাই এই ১০ বছরের সময়কালে বকেয়া থাকা ডিএ পাবেন। তার সঙ্গে ২০০৯ সালের পরের ১০ বছরে নিযুক্ত সরকারি কর্মচারীরাও নিজেদের সময়কালের ভিত্তিতে এই ডিএ-র সুবিধা পাবেন। নবান্ন সূত্রে খবর, এসএসসি–র ২০১৬ সালের প্যানেলের চাকরিহারা শিক্ষক–শিক্ষাকর্মীরা এই মহার্ঘভাতার সুবিধা পাবেন না।
উল্লেখ্য, গত ১৬ মে রাজ্যের মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত মামলায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ–র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এর জন্য ৬ সপ্তাহ সময় দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। সেই নির্দেশ আসার পর ২ সপ্তাহের বেশি সময় কেটে গিয়েছে। দ্রুত বকেয়া ডিএ–র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দেওয়ার দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠানো হচ্ছে সিপিএম সমর্থিত সরকারি কর্মচারী সংগঠনের তরফে। এই আবহে বর্তমানে সরকারি চাকরিতে কর্মরত কতজন ডিএ পাওয়ার যোগ্য এবং অবসরপ্রাপ্ত কতজন পাওয়ার যোগ্য তা সব দপ্তরকে জানাতে বলেছে অর্থ দপ্তর।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে রাজ্য সরকার নির্দিষ্ট সময়ে ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ মেটাতে ব্যর্থ হলে ফের প্রতিবাদের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। ডিএ না মিললে রাজ্য সরকারের কাছে নিজেদের দাবিগুলির বিষয় জানাতে নবান্ন অভিযানের ডাক দেবেন তাঁরা। পাশাপাশি গণবিক্ষোভেরও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। সর্বপরি বকেয়া ডিএ–র ২৫ শতাংশ না দিলে আন্দোলনের ঝাঁঝ আরও বাড়াতে পারে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ।