• ‘গ্রাম বিমুখ’ দেবাশিস-অনিকেত-আসফাকুল্লাকে কাজে যোগের নির্দেশ, অন্যথায় মোটা জরিমানার সম্ভাবনা
    প্রতিদিন | ২৯ মে ২০২৫
  • স্টাফ রিপোর্টার: পুরুলিয়া-মালদহ উত্তর দিনাজপুরে যেতে নারাজ। আসফাকুল্লা-অনিকেত-দেবাশিসের পছন্দ কলকাতা এবং শহরাঞ্চলের আশপাশের হাসপাতাল। তিন অতিবাম ‘বিপ্লবী’ চিকিৎসকের আচরণে ছিছিক্কার পড়ে গিয়েছে সমাজের নানা স্তরে। সমাজমাধ্যমে নেটনাগরিকদের একাংশের প্রশ্ন, ‘কোন মধু রয়েছে এখানে? যার জন্য শহর ছেড়ে যেতে চাইছেন না এই তিন চিকিৎসক।’ কিন্তু স্বাস্থ্যদপ্তর বলছে কাজে যোগ দিতে হবে। অন্যথায় গুনতে হতে পারে জরিমানা।

    উল্লেখ্য, মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্যদপ্তরের নয়া নোটিসে সিনিয়র রেসিডেন্টদের ‘নিয়মমাফিক’ বন্ড পোস্টিংয়ের ঘোষণা হয়েছে। সেই ‘পোস্টিং’-এ আর সকলে কাজে যোগ দিলেও ক্ষুব্ধ তিন ডাক্তার, দেবাশিস হালদার, আসফাকুল্লা নাইয়া, অনিকেত মাহাতো বুধবার ফের স্বাস্থ্যভবনে গিয়ে বসে পড়েন। যদিও সেখানে তাঁদের ঠারেঠোরে জানিয়ে দেওয়া হয়, “আগে কাজে যোগ দিন।” তবে তার পরেও নাছোড়বান্দা এই তিন। দেবাশিস হালদারের আজব যুক্তি, “আমাদের লোকেরা রয়েছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব।”

    উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, অতিবাম কিছু সিনিয়র চিকিৎসক এদের মাথা খাচ্ছেন। তাঁদের উসকানিতেই এমনটা হচ্ছে। তিন চিকিৎসকের কাছে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের প্রশ্ন, “আপনারা তো মানুষের পাশে থাকবেন বলে শপথ নিয়েছিলেন, এখন কলকাতার আশপাশে ঘুরঘুর করছেন। দূরের মানুষকে পরিষেবা দিতে কী অসুবিধা? আসলে মানুষকে সেবা দিতে চাইছেন সূত্রের খবর, সময়মতো কাজে যোগ না দিলে মোটা টাকা জরিমানা হতে পারে তিন অতিবাম চিকিৎসকেরই। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, হাসপাতালে সিনিয়র রেসিডেন্ট পদটি ‘বন্ড’ পোস্টিং। স্নাতকোত্তর পরীক্ষার পর সিনিয়র রেসিডেন্ট হিসাবে যোগ দিলে তিন বছরের বন্ড থাকে। বন্ড না মানলে, কিংবা তিন বছরের আগে বন্ড অমান্য করে বেরিয়ে এলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে মোটা টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হয়। তিন বছরে এই টাকার অঙ্কের পরিমাণ মোট ৩০ লক্ষ টাকা! অর্থাৎ, আসফাকুল্লা-অনিকেত যদি কাজে যোগ না দেন, তা হলে সর্বাধিক ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দিতে হতে পারে তাঁদের।

    জানা গিয়েছে, দেবাশিস সিনিয়র রেসিডেন্ট হিসাবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন বছর দুয়েক আগে। সিনিয়র রেসিডেন্টশিপের আর এক বছর বাকি রয়েছে তাঁর। ফলে তাঁকে অবশিষ্ট এক বছরের জন্য ১০ লক্ষ টাকা দিতে হবে। জানা গিয়েছে, শেষমেশ যদি নির্দেশ মেনে কাজে যোগ না দেন তা হলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার হতে পারে আসফাকুল্লা, অনিকেতদের। কারণ, আগামী দিনে কোনও কলেজে অধ্যাপনা করতে গেলেও অন্তত এক বছর সিনিয়র রেসিডেন্ট হিসাবে কাজের অভিজ্ঞতা থাকা বাধ্যতামূলক। সূত্রের খবর, বুধবার প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভেবেছিলেন এই তিন চিকিৎসক। কিন্তু হাই কোর্ট থেকে খালি হাতে ফিরতে হবে এই আশঙ্কায় তারা যাননি। আগামী ৩০ মে ফের তারা হাই কোর্টে মামলা করার কথা ভাবছেন।
  • Link to this news (প্রতিদিন)