• বিনা অনুমতিতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে চাকরিহারারা, বাধা পুলিশের
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ৩০ মে ২০২৫
  • রিভিউ পিটিশনের দিকে নজর রাখার পাশাপাশি চাকরিহারাদের পরীক্ষায় বসার আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বয়সে ছাড় থেকে শুরু করে শিক্ষকতায় অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নম্বর দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে বলে জানান তিনি। তবে কোনওভাবেই পরীক্ষা দিতে নারাজ চাকরিহারাদের একাংশ। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশি অনুমতি ছাড়াই বৃহস্পতিবার সকালে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে হাজির হন চাকরিহারাদের ৬ মহিলা প্রতিনিধি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়নি। পুলিশ তাঁদের সরিয়ে কালীঘাট থানায় নিয়ে যায়।

    কালীঘাটের পথে রওনা দেওয়ার আগে ওই প্রতিনিধি দলের তরফে জানানো হয়েছিল, বিনা অনুমতিতেই তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন কারণ এই অবস্থায় তাঁদের পক্ষে দিনক্ষণ ঠিক করে দেখা করতে যাওয়া সম্ভব নয়। তাঁরা কোনও অবস্থান বা বিক্ষোভ করতে যাচ্ছেন না। বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরতেই মুখ্যমন্ত্রীর মুখোমুখি হতে চান তাঁরা। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বিকাশ ভবনে থেকে মুখ্যমন্ত্রী বাড়ির পথে রওনা দেন সঙ্গীতা সাহা, রূপা কর্মকার, স্মৃতি রায়, নূর আমিনা, শিল্পী চক্রবর্তী এবং সাহানি নাজনিন। ৯টা ১০ নাগাদ তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে পৌঁছন।

    মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতিপত্র না থাকায় তাঁদের আটকায় কালীঘাট থানার পুলিশ। পরে ৬ জন শিক্ষিকাকে কালীঘাট থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। চাকরিহারা সঙ্গীতা বলেন, ‘আমরা কোনও আন্দোলন বা বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে আসিনি। আমরা জানতে এসেছিলাম, ১০ বছর সম্মানের সঙ্গে চাকরি করার পরেও পরীক্ষা দেওয়া কী ভাবে সম্ভব?’ কয়েক ঘণ্টা পরে অবশ্য তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

    সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর থানা থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সঙ্গীতা বলেন, ‘আমরা কোনওভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যেতে পারিনি। আমাদের যেতে দেওয়া হয়নি। আমরা কোনওভাবেই পরীক্ষা দেব না। আগের পদ আমাদের সসম্মানে ফিরিয়ে দিতে হবে। সমস্ত দাবিদাওয়া নিয়ে চিঠি লিখেছি। পুলিশের মাধ্যমে সেই চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে যাবে বলে আশ্বাস পেয়েছি।’

    প্রসঙ্গত, সুপ্রিম নির্দেশ মেনে ৩০ মে এসএসসির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি হবে। সমান্তরালভাবে নজর থাকবে রিভিউ পিটিশনের দিকেও। মঙ্গলবার নবান্নের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে এমনই জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থাৎ, চাকরিহারাদের পরীক্ষা দিতেই হবে। পরীক্ষা না দিয়ে ‘যোগ্য’দের পুনর্বহাল করা যাবে কি না তা ঠিক করবে শীর্ষ আদালতই। মুখ্যমন্ত্রী এও জানিয়ে রেখেছেন, ভবিষ্যতে রিভিউ পিটিশনের রায় যদি ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের মান্যতা দেয় তাহলে সেটাই কার্যকর করা হবে।

    এদিকে বৃহস্পতিবার নবান্নর গেট পর্যন্ত পৌঁছেছিলেন ৪ জন চাকরিহারা। ভিজিটর গেটে এসে তাঁরা চিঠি জমা দিয়ে চলে যান। তাঁদের মূল দাবি দুটি – নিজেদের আগের কর্মক্ষেত্রে যাতে তাঁরা কাজ শুরু করতে পারেন সেই ব্যবস্থা করা এবং আগামী দিনে যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে, তাতে যাতে তাঁরা অংশ নিতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।

    প্রসঙ্গত, দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগ তুলে স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার গোটা প্যানেলটাই বাতিল করে নতুন করে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের সেই নির্দেশ মেনে ৩০ মে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)