মেডিক্যালে বেআইনিভাবে চলছিল ক্যান্টিন আগুন লাগার পর টনক নড়ল কর্তৃপক্ষের
বর্তমান | ৩০ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: হাসপাতাল চত্বরে একটি ছোট ক্যান্টিনে অগ্নিকাণ্ডের পর টনক নড়ল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের। প্রসূতি বিভাগের পাশে থাকা অবৈধ বাজার ও খাবারের হোটেল সরিয়ে দেওয়ার পরও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল জতুগৃহ হয়ে রয়েছে, বুধবারের অগ্নিকাণ্ডে সেটাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখাল।
হাসপাতালের আনাচে-কানাচে স্টোভ জ্বালিয়ে চা, নানা ধরনের খাবার রান্নার ব্যবসা এখনও চলছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা হাসপাতালের পিছনে থাকা ক্যান্টিন। এই ক্যান্টিনের পাশাপাশি খাদ্যছায়া ও মা ক্যান্টিনের অগ্নিনির্বাপণ বিধি মেনে চলার বিষয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
বুধবার হাসপাতালের আউটডোর ও কলেজের অডিটোরিয়ামের মাঝে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠী পরিচালিত একটি ক্যান্টিনে আগুন লাগার ঘটনায় একগুচ্ছ অনিয়ম সামনে এসেছে। ডোমেস্টিক সিলিন্ডার দিয়ে রান্না করা, অসংখ্য ডোমেস্টিক সিলিন্ডার মজুত করার পাশাপাশি অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা মানার ক্ষেত্রে খামতি ধরা পড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে ক্যান্টিনটির নজরদারি নিয়ে। অভিযোগ, হাসপাতাল বা কলেজ কর্তৃপক্ষের কোনও টেন্ডার ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে একই মালিকানায় চলছে ক্যান্টিনটি। হাসপাতালের বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবহার করে চলছে সেটি। বিদ্যুতের সেই বিপুল খরচ বহন করতে হচ্ছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকেই।
হাসপাতালের অ্যাকাউন্টস অফিসার মোরতুজ হোসেন বলেন, ক্যান্টিনগুলির বিদ্যুতের বিলের মোটা টাকা আমাদের দিতে হয়। যে পুরনো ক্যান্টিনটি চলছে সেখানে হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স, রোগীর পরিবারের লোক সকলেই খেয়ে থাকেন। কর্তৃপক্ষকে ঘরভাড়া বাবদ কোনও টাকা দেওয়া হয় না। হাসপাতালে বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবহার করে ফ্রিজ, হিটার সহ সবকিছুই চালানো হচ্ছে। চলছে পাখা, জ্বলছে লাইট। এনিয়ে সম্প্রতি এজি বেঙ্গলের অডিটে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে।
অ্যাকাউন্টস অফিসার আরও বলেন, তখনও বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজর দেয়নি। কিন্তু বুধবার অগ্নিকাণ্ডের পর অবৈধভাবে চলা ক্যান্টিন নিয়ে আমরা বিশেষ পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ক্যান্টিন চালাতে গেলে সবকিছুই নিয়ম মেনে চলতে হবে। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, ফায়ার লাইসেন্সের মতো আবশ্যিক বিষয়গুলি করাতে হবে। হাসপাতালের চারদিকে অক্সিজেনের লাইন রয়েছে। কোনওভাবে সেখানে আগুন ছড়িয়ে পড়লে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে যাবে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, সব জেনেও এই ক্যান্টিন কার বা কাদের মদতে এতদিন চলে আসছে। এ নিয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছে কর্তৃপক্ষ।