• পাইপে বাড়ি বাড়ি গ্যাস প্রকল্পের সূচনা মোদির, পরিষেবা পাবেন কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারবাসী
    বর্তমান | ৩০ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আলিপুরদুয়ার: উত্তরের দুই জেলার জন্য সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ডের প্রশাসনিক সভামঞ্চ থেকে ওই প্রকল্পের কাজের সূচনা করেন তিনি। ১০১০ কোটি টাকার এই প্রকল্পে পাইপের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি রান্নার গ্যাস পৌঁছবে। আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলার আড়াই লক্ষ পরিবার এর সুবিধা পাবে। সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ে উত্তরের এই দুই জেলায় ১৯টি সিএনজি স্টেশনও তৈরি হবে। পরে ধাপে ধাপে তা আরও বাড়বে। অর্থাৎ, এই গ্যাসে যানবাহনও চলবে।

    রিমোটের বোতাম চেপে গ্যাস প্রকল্পের শিলান্যাসের পর এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে গোটা দেশে সাড়ে পাঁচশো জেলায় সিটি গ্যাসের নেটওয়ার্ক পৌঁছে গিয়েছে। এই প্রকল্পের সঙ্গে এবার জুড়ছে উত্তরবঙ্গের দুই জেলা। অনেক সস্তায় মিলবে এই গ্যাস। তাছাড়া বাড়িতে বসেই ওই গ্যাস পাওয়া যায়। ফলে চিন্তার কোনও কারণ থাকবে না।

    মোদি বলেন, ২০১৪ সালের আগে দেশে ১৪ কোটি পরিবারে রান্নার গ্যাসের সংযোগ ছিল। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৩১ কোটি। গত এক দশকে বিপুল হারে রান্নার গ্যাসের সংযোগ বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটরের সংখ্যাও লাফিয়ে বেড়েছে।

    সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন প্রকল্পের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গা। প্রশাসনিক সভামঞ্চে ভাষণে তিনি বলেন, একসময় উত্তরের গ্রামের মানুষ কাঠ জ্বেলে রান্না করতেন। ধোঁয়ায় তাঁদের প্রচণ্ড কষ্ট হতো। এখন তাঁরা উজ্জ্বলা যোজনায় বিনাপয়সায় গ্যাসের সংযোগ পাচ্ছেন। এবার আরও একধাপ এগিয়ে গেল। পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি রান্নার গ্যাস পৌঁছবে। সিলিন্ডার ফুরিয়ে যাওয়ার দুশ্চিন্তা থাকবে না। একেবারে ডোর স্টেপ ডেলিভারি। আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলার মানুষকে এই প্রকল্প উপহার দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।

    এদিকে, সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন প্রকল্পের পাশাপাশি বাংলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার বহু প্রকল্প হাতে নিয়েছে বলে এদিন জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, আমরা কল্যাণীতে এইমস করেছি। নিউ আলিপুরদুয়ার ও নিউ জলপাইগুড়ি রেলস্টেশনের উন্নয়ন হচ্ছে। উত্তরপূর্বের জন্য ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর হচ্ছে। মেট্রোর উন্নয়ন হয়েছে। আরও অনেক প্রকল্প রয়েছে। সবকা সাথ সবকা বিকাশের শপথ নিয়ে বাংলার উন্নয়নে আমরা সচেষ্ট। মোদি বলেন, আমরা মনে করি, উন্নত ভারত গড়তে বাংলার উন্নয়ন জরুরি। 

    এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থলের পাশেই শহিদমূর্তি অবহেলিত। নজর পড়ল না বিজেপির। ভারত-চীন সঙ্ঘাতে ২০২০ সালে শহিদ হন রাজবংশী জওয়ান বিপুল রায়। প্যারেড গ্রাউন্ডের পাশেই তাঁর মূর্তিতে প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা, বিজেপির কেউ মালা দেননি। এনিয়ে শহরের মানুষ ক্ষুব্ধ। সৌরভ চক্রবর্তী বিধায়ক থাকাকালীন ওই মূর্তি বসান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মূর্তিটি উন্মোচন করেন। এদিন বিজেপির তরফে উপেক্ষার পর রাতে ফের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে যুব তৃণমূলের পক্ষ থেকে মালা দিয়ে বীর শহিদকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

     আলিপুরদুয়ারে মোদির সভায় অনন্ত মহারাজ। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)