নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: জামাইয়ের পাতে মালদহের আম দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলে বদলাতে হতে পারে! কারণ উধাও সেই স্বর্গীয় স্বাদ, গন্ধ। বাজারে ঢুঁ মারলে দেখা যাচ্ছে, জামাইষষ্ঠী উপলক্ষ্যে লাভের পরিমাণ বাড়াতে সময়ের আগেই বাজারজাত করা হচ্ছে অপরিপক্ক আম। বেশি লাভের জন্য কৃত্রিম উপায়ে কার্বাইড বা প্রচলিত একটি গ্যাস দিয়ে চলছে আম পাকানো। অপরিপক্ক আম পেড়ে নেওয়ায় নষ্ট হচ্ছে স্বাদ এবং সুগন্ধ। রাসায়নিক ব্যবহার বন্ধ করতে একাধিকবার সেমিনার করলেও প্রশাসনের সব চেষ্টা ব্যর্থ হচ্ছে। এর পিছনে কাজ করছে একটা অসাধু চক্র।
মালদহের উদ্যানপালন দপ্তরের উপ অধিকর্তা সামন্ত লায়েক বলেন, জেলার আম বাজারে আসার সঠিক সময় হল জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ। সময়ের আগে আম পাকাতে সাধারণত কার্বাইড ব্যবহার করা হয়। আমরা সবসময়ই এই রাসায়নিক ব্যবহার থেকে দূরে থাকতে বলি। স্বাভাবিকভাবে আম পাকানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রচলিত একটি গ্যাসের মাধ্যমেও আম পাকানো হচ্ছে এখন।
সামন্ত জানান, কিন্তু এই দুই রাসায়নিক ব্যবহার করলে আসল স্বাদ পাওয়া যাবে না। কারণ আম অপরিপক্ক থেকে যায়। সাধারণত গাছে পরিপক্ক হওয়ার পর আম পেড়ে চার থেকে পাঁচদিন রাখলে পেকে যাবে। তারপর সেটা বাজারজাত করতে হয়।
উদ্যানপালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আমের মরশুমে বাজারে প্রথম আসে গোপাল ভোগ। মালদহের বাগানে উৎপাদিত গোপাল ভোগ আম প্রায় পাকতে শুরু করেছে। স্বাভাবিক পদ্ধতিতে আম বাজারে আসতে আসতে জুন মাসের প্রথম থেকে দ্বিতীয় সপ্তাহ হয়ে যাবে। এরপর একে একে বাজারে আসবে লক্ষণ ভোগ, ফজলি, হিমসাগর, ল্যাংরা এবং সব শেষে আশ্বিন মাসে আসে আশ্বিনা। এরপরেও বাজারে পাওয়া যায় বৃন্দাবনি আশ্বিনা আম।
মজার ব্যাপার হল, আশ্বিনা বাদ দিয়ে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই মালদহের বাজারে প্রায় প্রত্যেক প্রজাতির আম বিক্রি হওয়া শুরু করে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ইংলিশবাজারে রথবাড়ি বাজারে গিয়ে দেখা গেল মালদহের ফজলি আম। শুরুতে পাকা ফজলি আম বিকোয় ৫০ টাকা কিলো দরে। বেলার দিকে দফায় দফায় তিরিশ এবং বাজার শেষের মুখে পঁচিশ টাকায় বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা। বাজারে গোপাল ভোগ, হিমসাগর আম এদিন বিক্রি হয় ৫০ টাকা কিলো দরে।
মালদহ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, কার্বাইড সহ আমে যে কোনও রাসায়নিক ব্যবহার নিয়ে বারবার চাষিদের সতর্ক করা হচ্ছে। প্রশাসনের তরফে এরপর বাজারে আচমকা পরিদর্শন করা হবে। আমে কার্বাইড পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেব। ইংলিশবাজারে আমের বিকিকিনি। - নিজস্ব চিত্র।