এক বছরে মালদহ ও দার্জিলিংয়ে গর্ভবতী ১৬ হাজার ৮০৩ কিশোরী
বর্তমান | ৩০ মে ২০২৫
সুব্রত ধর ও সন্দীপন দত্ত: শিলিগুড়ি ও মালদহ: নাবালিকাদের বিয়ে আটকাতে প্রচার অব্যাহত। তবুও উত্তরবঙ্গের মালদহ ও দার্জিলিং জেলায় কিশোরী গর্ভবতীর হার উদ্বেগজনক। প্রশাসন সূত্রের খবর, এক বছরে সংশ্লিষ্ট দুই জেলায় গর্ভবতী কিশোরীর সংখ্যা ১৬ হাজার ৮০৩ জন। এমন গর্ভবতীর সংখ্যা মালদহে সর্বাধিক, যা ১৫ হাজারের বেশি।
প্রশাসনের আধিকারিকরা জানান, দু’দিন আগে কলকাতার সল্টলেকে এব্যাপারে কর্মশালা করেছে সমাজকল্যাণ দপ্তর। ইউনিসেফের সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজিত ওই শিবিরে প্রতিটি জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শ্রম, পঞ্চায়েত প্রভৃতি দপ্তরের প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন। নাবালিকা বিয়ে ও যৌন নির্যাতন রুখতে লাগাতার প্রচার অভিযানে নামার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শিশু সুরক্ষা নিয়ে তৎপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। নাবালিকা বিয়ের বিরুদ্ধে প্রচার চালানোর পাশাপাশি সরকার মেয়েদের স্কুলমুখী করতে সবুজসাথী ও কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু করেছে। তা সত্ত্বেও মালদহ জেলায় নাবালিকা বিয়ের হার উদ্বেগজনক। কয়েকদিন আগে এবিষয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে একটি রিপোর্ট পাঠায় স্বাস্থ্যদপ্তর। প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই রিপোর্ট অনুসারে ২০২৪-’২৫ অর্থবর্ষে মালদহ জেলায় গর্ভবতীর সংখ্যা ১ লক্ষ ৩ হাজার। এরমধ্যে কিশোরী ১৫ হাজার ৬০ জন, যা উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলার তুলনায় রেকর্ড। যা মোট গর্ভবতী মহিলার মধ্যে ১৫ শতাংশ। এদের বয়স ১২ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে।
এমন পরিসংখ্যান সামনে আসতেই বিভিন্ন মহল প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছে। তাদের অভিযোগ, গ্রামস্তরে সেভাবে নজরদারি নেই বলে গোপনে নাবালিকাদের বিয়ে হচ্ছে। মালদহের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, নাবালিকা বিয়ে রুখতে সচেতন করায় জোর দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের দিয়ে অঙ্গীকারপত্রে সই করানো হচ্ছে অভিভাবকদের। এজন্য আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের নিয়মিত বাড়ি বাড়ি যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দার্জিলিং জেলাতেও নাবালিক বিয়ে অব্যাহত। প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষে জেলায় গর্ভবতীর সংখ্যা ছিল ২১ হাজার ৯১৭ জন। যার মধ্যে কিশোরীর সংখ্যা ১৭২৬ জন। ২০২৪-’২৫ অর্থবর্ষের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত গর্ভবতীর সংখ্যা ২২ হাজার ৯১৪ জন। যার মধ্যে কিশোরী ১৭৪৩ জন। যা মোট গর্ভবতীর মধ্যে ৭.৬১ শতাংশ।
দার্জিলিংয়ের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, নাবালিকা বিয়ে রুখতে কন্যাশ্রী ক্লাব, যোদ্ধবাহিনী আরও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নাবালিকাদের সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজখবর নিতে শিক্ষাদপ্তর, পঞ্চায়েত ও পুলিসের সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানো, টোল ফ্রি নম্বর ১০৯৮ নিয়ে প্রচারে জোর দেওয়া হবে।