নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: কখনও বৃষ্টি, আবার কখনও প্রচণ্ড রোদ। এই আবহাওয়ায় বাদাম চাষিদের মুখে হাসি ফুটল। শালবনী ব্লকের একাধিক গ্রামে বাদাম চাষ বেড়েছে। চাষিরা উৎপাদিত বাদাম ভিনরাজ্যে পাঠাচ্ছেন। ভালো দাম পাওয়ায় খুশি চাষিরা। তবে শুধু শালবনী ব্লক নয়, জেলাজুড়েই বাদাম চাষ নতুন দিশা দেখাচ্ছে। চাষিদের কথায়, প্রতি বিঘা জমি থেকে গড়ে পাঁচ কুইন্টাল বাদাম উৎপাদন হয়েছে। প্রতি কুইন্টাল বাদাম বিক্রি করে ৪৮০০টাকা মিলছে। একইসঙ্গে মহিলারা বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। এরফলে বাদাম চাষে মহিলারাও আগ্রহ দেখাচ্ছেন। ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড় রাজ্যে বাদামের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মেদিনীপুরে উৎপাদিত বাদাম সেই সমস্ত রাজ্যে পাঠানো হচ্ছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি প্রতিভা মাইতি বলেন, রাজ্যের কৃষি ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। বাদাম চাষ করে বহু চাষি লাভবান হচ্ছেন। লাভ হওয়ায় আগামী দিনে বাদাম চাষ আরও বাড়বে বলে আশাবাদী। রাজ্যজুড়েই বাদাম চাষ বেড়েছে। অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট মিশন ডিরেক্টর তথা
অতিরিক্ত জেলাশাসক গোবিন্দ হালদার বলেন, জেলায় কৃষি ব্যবস্থার উন্নতির জন্য নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। চাষের উন্নতির জন্য নিয়মিত কৃষকদের নানা পরামর্শ দেওয়া হয়। কৃষকদের পাশে জেলার কৃষি দপ্তর সর্বদা থাকবে।
রাজ্য সরকারের তরফে শিল্পের পাশাপাশি কৃষি ব্যবস্থা ঢেলে সাজার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বিকল্প চাষ বাড়ানোর জন্য চাষিদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই জেলার প্রতিটি ব্লকে নতুন ধরনের চাষের প্রবণতা বেড়েছে। ধান চাষের পাশাপাশি বাদাম, তিল, বিভিন্ন ফলের চাষ করা হচ্ছে। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন প্রশাসনিক বৈঠক থেকে কৃষিতে স্বনির্ভর হওয়ার কথা বলেছেন। সেই লক্ষ্যেই জেলায় চিনা বাদামের চাষ বেড়েছে। নতুন ধরনের চাষের মাধ্যমে আয় বাড়ছে চাষিদের। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্যান্য চাষের তুলনায় বাদাম চাষ বেশ লাভজনক। এক হেক্টর জমিতে ২২কুইন্টাল পর্যন্ত বাদাম পাওয়া যায়। রাজ্যে প্রায় এক লক্ষ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়। দুই মেদিনীপুর ছাড়াও নদীয়া, হুগলি, উত্তর দিনাজপুর ও জলপাইগুড়ি জেলায় বাদাম চাষের প্রবণতা বেড়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী ব্লক ছাড়াও খড়্গপুর মহকুমার একাধিক ব্লকে বাদাম চাষ হয়েছে। এবছর শালবনী ব্লকের নর সিংহপুর, যুগডিহা, কাশিজোড়া এলাকায় বাদামের ফলন ভালো হয়েছে। শালবনীর কাছারি রোড এলাকার বাদাম চাষি অরূপ মিদ্যা বলেন, কয়েক বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছিলাম। ভালো ফলন হয়েছে। মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হওয়ায় খুবই উপকার হয়েছে। বাজারে দাম পাওয়ায় লক্ষ্মীলাভ হল। শালবনীতে বস্তাবন্দি করা হচ্ছে বাদাম।-নিজস্ব চিত্র