• গন্ধেশ্বরী ও দ্বারকেশ্বরের উপর দু’টি সেতু জীর্ণ, চিন্তায় প্রশাসন
    বর্তমান | ৩০ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: বর্ষার আগে বাঁকুড়া শহরের দুই প্রান্তে গন্ধেশ্বরী নদী ও দ্বারকেশ্বর নদের উপরের দু’টি জীর্ণ সেতু প্রশাসনের চিন্তা বাড়াচ্ছে। দ্বারকেশ্বর নদের উপরে থাকা এক্তেশ্বর সেতুর রেলিংয়ের একাংশ ভেঙে গিয়েছে। যে কোনও সময় বাইক কিংবা ছোট গাড়ি ভাঙা অংশ দিয়ে নীচে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে, লক্ষ্যাতোড়া মহাশ্মশান সংলগ্ন গন্ধেশ্বরী নদীর উপরের সেতুর একাংশও ভেঙেচুরে গিয়েছে। জায়গায় জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলের সময়ে সেতু বিপজ্জনকভাবে দুলতে থাকে। বর্ষার সময়ে কোনও কারণে সেতু ভেঙে গেলে বা যানবাহনের চাপে বড় ক্ষয়ক্ষতি হলে জেলার অর্থনীতির উপর তার প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

    বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, বাঁকুড়া শহর সংলগ্ন জাতীয় সড়কের ওই সেতু দু’টি অনেক পুরনো। বিগত বছরগুলিতে প্রয়োজনের ভিত্তিতে সেতুর ছোটখাটো সংস্কার হয়েছে। তবে সেতু দু’টির আমূল সংস্কারের প্রয়োজন। আমরা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। তবে বর্ষার আগে তা সম্ভব নয়। আপাতত পূর্তদপ্তরকে দিয়ে সেতু দু’টির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো যায় কি না, তা দেখা হচ্ছে। 

    ট্রাফিক পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, বর্তমানে দুর্গাপুর ব্যারেজের সেতুর সংস্কার কাজ চলছে। সেই কারণে বাঁকুড়া হয়ে চলাচলকারী যানবাহনগুলিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তার ফলে ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর চাপ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে দু’টি নদনদীর উপরে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ওই দুটি সেতুর বড়সড় ক্ষতি হলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া মুশকিল হবে। এক্তেশ্বর সেতুর রেলিং ভাঙার বিষয়টি আমাদের নজরেও পড়েছে। কোনও যানবাহনের ধাক্কায় তা ভেঙেছে বলেই মনে হচ্ছে। আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। 

    পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় সড়ক হয়ে দৈনিক কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করে। তারমধ্যে যাত্রীবাহী বাস, ছোটগাড়ি, বাইক যেমন রয়েছে, তেমনই ভারী পণ্যবাহী যানবাহনও রয়েছে। ট্রেলার, ট্রাক, ডাম্পার বালি, পাথর, ইটের মতো নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে সেতুর উপর দিয়ে যাওয়ার সময় কম্পনের সৃষ্টি হয়। তার ফলে ফাটল ক্রমশ চওড়া হতে থাকে। পুলিস আধিকারিকদের মতে, ওই দু’টি সেতু যে সময়ে তৈরি করা হয়েছিল, তখন যানবাহনের ধরন আলাদা ছিল। বর্তমানে ১০-১২ চাকার নীচে কোনও পণ্যবাহী ট্রাক, ডাম্পার নেই বললেই চলে। ট্রেলার, কন্টেনারগুলির মালবহনের ক্ষমতা আরও বেশি। ফ্লাই অ্যাশ, সিমেন্ট সহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে যাওয়ার জন্য বর্তমানে বড় বড় ট্যাঙ্কার ব্যবহার করা হয়। সেগুলির ওজন বেশ কয়েক টন। ওই ধরনের পণ্যবাহী যানবাহনের ভার নেওয়ার ক্ষমতা সেতুগুলির আছে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে আধিকারিকরা। এই পরিস্থিতিতে বিকল্প সেতু নির্মাণই শ্রেয় বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। 
  • Link to this news (বর্তমান)