রাজ্যের প্রতিটি এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জকে বছরে দু’টি করে ‘চাকরি মেলা’ করার নির্দেশ রাজ্যের
বর্তমান | ৩০ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: স্থানীয় এলাকায় কর্মসংস্থান বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়েছে রাজ্য সরকার। সেইমতো রাজ্যের প্রতিটি এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ দপ্তরকে জব ড্রাইভ কর্মসূচি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবার থেকে প্রতিমাসে বিভিন্ন জেলার এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ অফিসগুলিকে দু’টি করে জব ড্রাইভের আয়োজন করতে হবে। অর্থাৎ বছরের দশ মাসে কুড়িটি করে চাকরির মেলা বসবে। কারণ পুজোর মাস অক্টোবর এবং বৎসরান্তের মার্চ মাসে এই কর্মসূচি করা হবে না। প্রশাসনের আধিকারিকদের দাবি, এই কর্মসূচি বাড়ানোর মূল লক্ষ্য হল স্থানীয় এলাকায় বেকারদের মধ্যে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা গড়ে তোলা। লাগাতার এই কর্মসূচি করলে বেসরকারি সংস্থার তরফ থেকেও সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করার প্রবণতা বাড়বে। পাশাপাশি বেকার যুবক যুবতীদের মধ্যে জব ড্রাইভ থেকে কাজ পাওয়া নিয়ে আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে।
নদীয়া জেলার এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জের জয়েন্ট ডিরেক্টর অপূর্ব বিশ্বাস বলেন, বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রেখেছি। সেই সমস্ত সংস্থার সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীদের আমরা সেতুবন্ধনের কাজ করছি। এর ফলে অনেক বেকার যুবক যুবতী চাকরি পাচ্ছেন। এবছর প্রতিমাসে দু’টি করে জব ড্রাইভের আয়োজন করা হবে। এখান থেকে ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে চাকরিপ্রার্থীরা সরাসরি কাজ পাবেন।
নদীয়া জেলায় কৃষ্ণনগর, রানাঘাট এবং কল্যাণী, এই মহকুমায় তিনটি এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ অফিস রয়েছে। নতুন অর্থ বছরে, প্রতিটি অফিস থেকে কুড়িটি জব ড্রাইভের আয়োজন করা হবে। অর্থাৎ শুধু নদীয়া জেলাতেই এক বছরে ৬০টি জব ড্রাইভ করা হবে। গতবছর থেকেই এই কর্মসূচি পুরোদমে শুরু হয়। কৃষ্ণনগর মহকুমার এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ অফিস থেকে অনেকেই চাকরি পেয়েছেন বিভিন্ন সংস্থায়। চলতি বছরে এপ্রিল মাসে কৃষ্ণনগরের দু’টি জব ড্রাইভ কর্মসূচিতে ১৩১ জন অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেখান থেকে ২৩ জনকে শর্ট লিস্ট করেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা।
বুধবার ইন্টারভিউ দিতে আসা বেথুয়াডহরির বাসিন্দা নূপুর চৌধুরী বলেন, আমি গত বছর বিএসসি অনার্স নিয়ে পাস করি। পোস্ট অফিসের লাইফ ইনসিওরেন্সের কাজের জন্য ইন্টারভিউ দিয়েছি। খুব ভালো হয়েছে। সুযোগ পেলে আমি অবশ্যই কাজে যোগদান করব।
বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে রাজ্য সরকার এক অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বেসরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে সেতুবন্ধন গড়ে তুলে চাকরির সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে সরাসরি ‘ওয়াক-ইন ইন্টারভিউ’-র মাধ্যমে। এই কর্মসূচির পোশাকি নাম ‘জব ড্রাইভ’। ইতিমধ্যেই এর মাধ্যমে মিলছে ভালো সাড়া। অনেক যুবক-যুবতী গড়ে মাসে ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা আয় করতে পারছেন এই উদ্যোগের ফলে। এমনকী কিছু ক্ষেত্রে মাসিক ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতনের চাকরির সুযোগও মিলছে। অধিকাংশ চাকরিপ্রার্থীই বাড়ি থেকেই কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন, ফলে জেলার বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ছে না। তবে পাশাপাশি কলকাতা ও শহরতলির বিভিন্ন এলাকায় পোস্টিংও দেওয়া হচ্ছে উপযুক্ত প্রার্থীদের।