• উদ্ধার হল হুগলির নিখোঁজ নাবালিকার দেহ, অপরাধীর ফাঁসি চায় পরিবার...
    আজকাল | ৩০ মে ২০২৫
  • মিল্টন সেন, হুগলি:‌ বাড়ি থেকে প্রায় দু’‌কিলোমিটার দূরে নপাড়া এলাকায় ফাঁকা মাঠে পড়েছিল দেহ। অবশেষে দু’‌দিন পরে কানাইপুরের নিখোঁজ নাবালিকার দেহ উদ্ধার হল। এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের তরফে খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। পুলিশের উদ্যোগে রাতেই মৃতদেহ উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সে করে শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কেন পরিবারকে দেহ দেখতে দেওয়া হয়নি?‌ এই অভিযোগে কানাইপুর পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয়রা। ঘটনাস্থলে পৌঁছন চন্দননগর পুলিশের কমিশনার অমিত পি জাভালগি, ডিসিপি অর্ণব বিশ্বাস, এসিপি আলি রাজা সহ উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। 

    গত মঙ্গকবার বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিল নাবালিকা। ওই দিন বিশেষভাবে সক্ষম বছর তেরোর ওই নাবালিকাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় কানাইপুর বাসাই কলোনির বাসিন্দা অসীম মজুমদার। অসীম নাবালিকার বাবার বন্ধু। বিবাহিত। তবে তিন বছর আগে স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেছে। ভাড়া বাড়িতে মা বাবা নিজের ছেলেকে নিয়ে থাকে। তবে এক সময়ের বন্ধু যে তার মেয়ের সঙ্গে এমন কাণ্ড ঘটাবে তা ভাবতে পারেননি নাবালিকার বাবা। 

    শুরু থেকেই পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি পরিবারকে আশ্বস্ত করেছিলেন স্নিফার ডগ দিয়ে তল্লাশি চালানো হয়েছে। নাবালিকার খোঁজ মিলবে তাড়াতাড়ি। বৃহস্পতিবার সকালে স্নিফার ডগ নিয়ে এসে এলাকায় তন্নতন্ন করে তল্লাশি চালানো হয়। স্থানীয় পুকুরে নামানো হয় ডুবুরি। ফেলা হয় জাল। অবশেষে রাতে পুলিশের জালে ধরা পরে কানাইপুরে নাবালিকা ধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্ত অসীম মজুমদার। ডানকুনির খরিয়াল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে উত্তরপাড়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। 

    নাবালিকার সঙ্গে এমন ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না স্থানীয়রা। নাবালিকার মা সহ প্রতিবেশি কানাইপুর কলোনির প্রত্যেকেই অভিযুক্তের ফাঁসি দাবি করেছেন। একইসঙ্গে অন্য কেউ এই ঘটনায় যুক্ত থাকলে তারও কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন। শুক্রবার ধৃতকে শ্রীরামপুর আদালতে পেশ করা হবে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয় শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে মৃত্যুর কারণ প্রসঙ্গে নিশ্চিত হতে চাইছে পুলিশ। পরিবারের লোককে দিয়ে দেহ শনাক্ত করা হবে। এই প্রসঙ্গে ডিসিপি শ্রীরামপুর অর্ণব বিশ্বাস জানিয়েছেন, ডানকুনি খরিয়াল এর কাছ থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জানার চেষ্টা করা হচ্ছে এই ঘটনার সঙ্গে আর কেউ যুক্ত আছে নাকি।

    এই প্রসঙ্গে রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‌এটা হল জঘন্যতম অপরাধ এবং এই অপরাধ যে বা যারা ঘটিয়েছে তার কঠোরতম শাস্তি চাইছি। ধর্ষণ করে খুন এর চরমতম শাস্তি হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড। বিধানসভায় সেই বিল আনা হয়েছে। যে বিল শুধুমাত্র রাষ্ট্রপতির সইয়ের অপেক্ষা। সেখানে এরকম একটি বিশেষভাবে সক্ষম নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুন কোনওরকম ভাবেই সহ্য করা যায় না। এটা একটা জঘন্যতম অপরাধ। যখনই আমার কানে বিষয়টা এসেছে তখনই আমি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। আইনের দিক থেকে যেটা করণীয় কোর্টের কাছে সেটা পুলিশ প্রশাসন করবে। আমরা চাই এর চরমতম শাস্তি হোক। যাতে আগামী দিনে অন্যরা এ ধরনের অপরাধ ঘটাতে সাহস না পায়।’‌ 

    ছবি:‌ পার্থ রাহা 
  • Link to this news (আজকাল)