• ডুয়ার্সের দুই চা বাগানে ইডি
    বর্তমান | ৩১ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, নাগরাকাটা: জেলবন্দি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের  ঘনিষ্ঠ প্রসন্ন রায়ের সম্পত্তির বিষয়ে খোঁজখবর করতে শুক্রবার ডুয়ার্সের দু’টি চা বাগানে তদন্তে আসে এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্টের টিম। দু’টি দলে বিভক্ত হয়ে ইডি’র তদন্তকারী অফিসাররা মেটেলির সামসিং ও নাগরাকাটার বামনডাঙা তন্ডু চা বাগানে আসেন। সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত তাঁরা নথিপত্র সংগ্রহ করেন। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর টাকা প্রসন্নের মাধ্যমে ডুয়ার্সের চা বাগানে বিনিয়োগ হয়েছিল  বলে জেনেছেন তদন্তকারীরা। সেই বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে  ইডি’র হানা বলে জানা গিয়েছে। এমন অবস্থায় বাগান যাতে বন্ধ না হয় তারজন্য শ্রমিকরা আতঙ্কে রয়েছেন। বাগানের অফিসের সামনে তাঁরা দিনভর দাঁড়িয়ে থাকেন। 

    ২০২২ সালের জুলাই মাসে পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হন। তার দু’মাসের মাথায় শিক্ষা দুর্নীতির অন্যতম এজেন্ট প্রসন্ন রায় একই অভিযোগে গ্রেপ্তার হন। ২০২০ সাল থেকেই দু’টি বাগান নিজের নামে নিয়ে পরিচালনা করছিলেন প্রসন্ন। এদিকে, প্রসন্ন রায় গ্রেপ্তারের পর তাঁর এক আত্মীয় দু’টি চা বাগান পরিচালনার দায়িত্ব পান। কিন্তু পরে বাগান দু’টি বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ২০২৩ সাল থেকে দু’টি চা বাগানই নতুন মালিক ঋত্বিক ভাট্টাচার্য পরিচালনা করছেন। এদিন ঋত্বিকবাবু বলেন, ইডি ৯ জুন নথিপত্র নিয়ে কলকাতায় ডেকেছে। সেখানে নির্দিষ্ট দিনে উপস্থিত থাকব। 

    সামসিংয়ে ৮৫০ এবং বামনডাঙা তন্ডু চা বাগানে এক হাজার শ্রমিক রয়েছেন। দু’টি বাগানের শ্রমিক ও কর্মীরা জানান, প্রসন্ন রায় মাঝেমধ্যেই বাগানে আসতেন। এক-দুইবার তাঁর স্ত্রীও এসেছিলেন। ২০২১ সালে প্রসন্ন রায় নিজে অনেক রাত পর্যন্ত থেকে দুই বাগানের শ্রমিকদের পুজো বোনাসের টাকা নগদে মিটিয়েছিলেন বলে শ্রমিকরা জানান। 

    ইডি প্রসন্নকে গ্রেপ্তার করে অনেক তথ্যই জেনেছে। বিশেষ করে দু’টি চা বাগান পরিচালনায় কোটি কোটি টাকা প্রসন্ন রায় কোথা থেকে পেয়েছিলেন, নিয়োগ দুর্নীতি করে আসা কালো টাকা এই চা বাগানে বিনিয়োগ করেছিলেন  প্রসন্ন। এমনটাই দাবি করেছে ইডি।  পাশাপাশি প্রসন্ন কীভাবে চা বাগান অন্যেকে বিক্রি করলেন, কত টাকায় বিক্রি হয়েছে এবং টাকা কীভাবে .মেটানো হয়েছে তাই নিয়ে তথ্য পেয়েছে এজেন্সি। সূত্রের পর হাতবদলের ক্ষেত্রে একটা মোটা অংশ নগদে মেটানো হয়। এমনকী প্রসন্ন যখন এই চা বাগান কেনেন তখন তিনিও নগদ ঢেলেছিলেন বলে খবর। 

    শুক্রবার ইডি দু’টি চা বাগানের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, পাসবুক সহ অন্যান্য নথিপত্র খতিয়েই দেখে। কিছু নথিপত্রের ফটোকপি করে, কিছু ছবিও তুলে নিয়ে যায়। তন্ডু বাগানের শ্রমিক কৈলাস গোপ বলেন, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁরা ছিলেন। আমরা চাই তদন্ত হচ্ছে হোক, বাগান যেন বন্ধ না হয়। দুই চা বাগানের মালিক ঋত্বিক ভট্টাচার্য বলেন, আগে যিনি বাগান দু’টি পরিচালনা করতেন তাঁর বিষয়ে খোঁজখবর নিতে এসেছিল ইডি।
  • Link to this news (বর্তমান)