• কুরবান শা খুনের মামলায় আরও তিন পুলিস অফিসার বিরূপ সাক্ষী ঘোষিত
    বর্তমান | ৩১ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: পাঁশকুড়ার কুরবান শা খুন মামলায় সাক্ষ্য দিতে গিয়ে আগেই চার পুলিস অফিসার বিরূপ সাক্ষী ঘোষিত হয়েছিলেন। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন আরও তিনজন। চলতি মাসে এই মামলায় কলকাতা নগর দায়রা আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে আরও তিনজন পুলিস অফিসার বিরূপ সাক্ষী ঘোষিত হলেন। সিজার লিস্টে স্বাক্ষর নিয়ে প্রত্যেকের বয়ান এক, ঊর্ধ্বতন অফিসারদের নির্দেশে সাদা কাগজে সই করেছেন। একটা মামলায় সাতজন পুলিস অফিসার ও কর্মী বিরূপ ঘোষিত হওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন। গত ৮মে এএসআই মিঠুন রায়, গত ১৬মে এসআই মিন্টুকুমার মণ্ডল এবং ২০মে অবসরপ্রাপ্ত পুলিস কর্মী দেবীপ্রসাদ দাঁ কলকাতা নগর দায়রা আদালতে কুরবান খুনের মামলায় সাক্ষ্য দেন। এই মামলার স্পেশাল পিপি গণেশ মাইতি তাঁকে বিরূপ সাক্ষী হিসেবে ঘোষণা করেন। গত ২০১৯ সালে ৭অক্টোবর পাঁশকুড়া থানার মাইসোরায় দলীয় কার্যালয়ের মধ্যে খুন হন তৃণমূল নেতা কুরবান শা। সেই সময় ওই থানার সেকেন্ড অফিসার ছিলেন বিনয় মান্না। বর্তমানে ইন্সপেক্টর প্রমোশন পেয়ে বসিরহাট পুলিস জেলায় কর্মরত। এছাড়াও ওই সময় পাঁশকুড়া থানার এএসআই ছিলেন দিলীপ চক্রবর্তী ও আমিনুল ইসলাম। তাঁরা এসআই পদে প্রমোশন পেয়েছেন। দিলীপবাবু দীঘা জগন্নাথ মন্দির ফাঁড়ির ইন-চার্জ। আমিনুল সাহেব ভূপতিনগর থানায় কর্মরত। তাঁরা প্রত্যেকেই ওই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী। তাঁরা তিনজনেই বিরূপ ঘোষিত হয়েছেন। এছাড়াও মাইসোরার ভিলেজ পুলিস কাজি নজরুল ওই মামলায় সাক্ষ্য দিতে গিয়ে বিরূপ ঘোষিত হয়েছেন। বিরূপ সাক্ষী নজরুলকে ১০দিনের জন্য কাজ থেকে বসিয়ে দিয়েছিল জেলা পুলিস। আরেক বিরূপ সাক্ষী আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পুলিসের পদস্থ অফিসারের কাছে সুপারিশ করেছেন সরকারি আইনজীবী। 

    চলতি মাসে আরও তিন পুলিস অফিসার বিরূপ সাক্ষী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। ঘটনার সময় কোলাঘাট থানায় কর্মরত মিঠুন রায় গত ৮মে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে বিরূপ ঘোষিত হয়েছেন। এখন তিনি চন্দ্রকোণা রোড বিট হাউসে কর্মরত। তিনি এই মামলার ৭৭ নম্বর সাক্ষী। ২০১৯ সালে খড়্গপুর টাউন থানার এএসআই পদে কর্মরত মিণ্টুকুমার মণ্ডল এখন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে এসআই হিসেবে কর্মরত। তিনিও বিরূপ সাক্ষী বলে সরকারি আইনজীবী ঘোষণা করেছেন। খুনের ঘটনায় শ্যুটার সহ দু’জনের বাড়ি ওই থানা এলাকায়। সিজার লিস্টে তাঁর স্বাক্ষর রয়েছে। সেই সুবাদে তিনি ৭৮ নম্বর মামালর সাক্ষী। এছাড়া, ঘটনার সময় পাঁশকুড়ায় কর্মরত বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত দেবীপ্রসাদ দাঁ ২০মে আদালতে সাক্ষী দেন। ৭৯ নম্বরের ওই সাক্ষীকেও বিরূপ ঘোষণা করা হয়। খুনের ঘটনার পর পরই মাইসোরা পার্টি অফিসে পুলিস মোতায়েন ছিল। সেই টিমে ছিলেন দেবীপ্রসাদবাবু।

    ওই খুনের ঘটনায় মোট আটজন গ্রেপ্তার হয়েছিল। ধাপে ধাপে সকলে জামিন পেয়েছে। মামলার মোট সাক্ষীর সংখ্যা ১১৪ জন। আগামী ৩জুন ৮০ নম্বর সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ হবে। বাদী পক্ষের আইনজীবী মাসুম আলি সর্দার বলেন, মে মাসে আরও তিনজন পুলিস অফিসার ও কর্মী বিরূপ সাক্ষী হিসেবে ঘোষিত হয়েছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)