• নবদ্বীপের মহাশ্মশানকে ঢেলে সাজাতে উদ্যোগ, একগুচ্ছ পরিকল্পনা পুরসভার
    বর্তমান | ৩১ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: বৈষ্ণবতীর্থ নবদ্বীপের মহাশ্মশানকে আরও ঢেলে সাজাতে একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছে পুরসভা। এই মহাশ্মশানে মৃতদেহ সুষ্ঠুভাবে সৎকার বা সমাধির জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে নবদ্বীপ পুর কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই মহাশ্মশানের পুরনো ভবনটি সম্পূর্ণভাবে সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। শ্মশানঘাটের অফিসঘর, বৈদ্যুতিক চুল্লির ঘর, যাত্রী প্রতীক্ষালয়, শ্মশানে ঢোকার মূল গেট থেকে শুরু করে সবকিছুই নতুন করে সংস্কার করা হচ্ছে। এছাড়াও, কাঠে দাহ করার চুল্লি এবং সমাধিক্ষেত্রের জায়গা সংরক্ষিত রাখার জন্য সীমানা প্রাচীর দেওয়ার কাজ চলছে। এই কর্মকাণ্ডে সবমিলিয়ে খরচ করা হবে প্রায় ৫৩লক্ষ টাকা। সীমানা প্রাচীর ও পুরনো ভবন সংস্কারের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে যথাক্রমে ৩১লক্ষ ও ২২লক্ষ টাকা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পুরসভার উন্নয়নমূলক তহবিলের টাকায় সাজিয়ে তোলা হচ্ছে এই মহাশ্মশানটি। এর সঙ্গে আরও বেশকিছু উন্নয়নমূলক কাজ এই মহাশ্মশানে হবে বলে জানিয়েছেন পুরসভার চেয়ারম্যান বিমানকৃষ্ণ সাহা। এর ফলে উপকৃত হবেন নবদ্বীপ শ্মশানে সৎকার করতে আসা মৃতের পরিবার-পরিজনরা।

    শ্রীচৈতন্যের জন্মস্থান ও লীলাক্ষেত্র নবদ্বীপ শহরে ভাগীরথীর তীরে অবস্থিত এই মহাশ্মশান। এখানে তিনটি বৈদ্যুতিক ও চারটি কাঠের চুল্লিতে মৃতদেহ দাহ করা হয়। বিশেষ রীতি মেনে মৃতদেহ সমাধি দেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৪০-৪৫টি মৃতদেহ সৎকার করা হয়। নদীয়ার বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী পূর্ব বর্ধমানের সমুদ্রগড়, ধাত্রীগ্রাম, কালনা, দাঁইহাট, উত্তর ২৪পরগনার বনগাঁ, বাগদা, এমনকী, বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুর থেকেও অনেকে প্রিয়জনের মৃতদেহ দাহ করতে চৈতন্যভূমি নবদ্বীপের মহাশ্মশানে আসেন। এখানে নির্দিষ্ট স্থানে মঠ-মন্দিরের বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীদের মৃতদেহও সমাধিস্থ করা হয়।

    পুরসভার চেয়ারম্যান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, নবদ্বীপের মহাশ্মশানটি সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা ছিল দীর্ঘদিনের। মুখ্যমন্ত্রী এই শহরকে হেরিটেজ ঘোষণা করেছেন অনেক আগেই। তাঁর পরিকল্পনা এবং অর্থানুকূল্যে শ্মশান সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। বাংলার অন্যান্য শ্মশানঘাটের চেয়ে এটির গুরুত্ব ও মর্যাদা অনেক বেশি। শ্রীচৈতন্যের জন্মস্থান এই শহরের একটা আলাদা ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। এখানে মৃতদেহ দাহ করা হয়। আবার বিশেষ রীতি মেনে মৃতদেহ সমাধি দেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। সেইসব সমাধির সংরক্ষণ এবং নিরাপত্তার স্বার্থে শ্মশানঘাটে  সীমানা প্রাচীর দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নবদ্বীপ শ্মশানঘাটের শিফট ইন-চার্জ মানব সাহা বলেন, দীর্ঘদিনের দাবি মেনে সীমানা প্রাচীর হচ্ছে দেখে আমরা খুশি। শ্মশানে যাওয়ার রাস্তায় পুরসভার পক্ষ থেকে অত্যাধুনিক আলো লাগানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার হবে। উল্লেখ্য, এই মহাশ্মশানে মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিশেষ ব্যবস্থাও রয়েছে। মৃতের পরিবারের সদস্য বা আত্মীয়-পরিজনদের অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে আসেন। শ্মশানে পৌঁছতে দেরি হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে সকলের সুবিধার্থে মৃতদেহ সংরক্ষণের বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)