• ভিজিল্যান্স অফিসার সেজে ট্রেনের টিকিট পরীক্ষা, ধৃত
    বর্তমান | ৩১ মে ২০২৫
  • শুভ্র চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা: রেলের ভিজিল্যান্স অফিসার সেজে লালগোলা প্যাসেঞ্জারের যাত্রীদের টিকিট ও আই কার্ড পরীক্ষা করছিল অভিযুক্ত। কেউ টিকিট দেখাতে না পারলে কড়া কথা শোনাচ্ছিল। নিত্যযাত্রী যাঁরা, তাঁদের সন্দেহ হয়। টিকিট তো পরীক্ষা করেন টিটি। ভিজিল্যান্সের অফিসারের এত কাজ থাকতে তিনি টিকিট পরীক্ষা করতে যাবেন কেন! এরপর যাত্রীরাই ওই ট্রেনের টিকিট পরীক্ষককে ডেকে এনে ওই ব্যক্তির পরিচয় জানতে চান। তখন অসংলগ্ন কথা বলতে শুরু করে ওই ব্যক্তি। চলে আসে রেল পুলিস। তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরিয়ে পড়ে ঝুলির বিড়াল। আসলে সে একজন জালিয়াত। ভিজিল্যান্সের নাম ভাঁড়িয়ে টাকা তোলাই ছিল তার উদ্দেশ্য। রানাঘাট জিআরপি ছদ্মবেশী জালিয়াত সঞ্জয় ঘোষালকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে ভুয়ো পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে।

    রেল পুলিস সূত্রে খবর, মুচিপাড়া থানা এলাকার প্রেমচাঁদ বড়াল স্ট্রিটের বাসিন্দা সঞ্জয় কয়েকদিন আগে ধোপদুরস্ত হয়ে শিয়ালদহ থেকে লালগোলা প্যাসেঞ্জারে ওঠে। সংরক্ষিত কামরায় অন্য যাত্রীদের সঙ্গে ব্যাগ নিয়ে বসেছিল। ট্রেন ছাড়ার কিছুক্ষণ পর সে যাত্রীদের টিকিট পরীক্ষা করতে শুরু করে। যাত্রীদের বলে, ভিজিল্যান্স চেকিং চলছে। কারা বিনা টিকিটে ট্রেনে উঠেছেন, রেলের কোন অফিসার ঘুষের বিনিময়ে বিনা টিকিটের যাত্রীদের ছেড়ে দিচ্ছেন, সেসব দেখাই তার কাজ। নিজেকে ভিজিল্যান্সের বড় অফিসার বলেও পরিচয় দেয়। সেই কথা শুনে ট্রেনের নিত্যযাত্রী এক শিক্ষকের সন্দেহ হয়। ভিজিল্যান্স অফিসার কবে থেকে টিকিট পরীক্ষা শুরু করলেন, জানতে চাইলে নানারকম উত্তর দেয় ওই ব্যক্তি। এতে অন্যান্য যাত্রীদের সন্দেহ আরও বাড়ে। তাঁরাই ওই কোচে থাকা টিকিট পরীক্ষককে ডেকে আনেন। টিটি ওই ব্যক্তির পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে, তা দেখাতে পারেনি সে। কোথায় পোস্টিং, ঊর্ধ্বতন অফিসার কে ইত্যাদি প্রশ্নের মুখে বিড়ম্বনায় পড়ে ওই ছদ্মবেশী। ট্রেন কৃষ্ণনগরে পৌঁছলে অভিযুক্ত সঞ্জয়কে তুলে দেওয়া আরপিএফের হাতে। আরপিএফের অফিসাররা দেখেন, তার গলায় নীল রঙের একটি ফিতে রয়েছে। তাতে লেখা ভারতীয় রেলওয়ে। এরপর একটি পরিচয়পত্র দেখায়। রেলের এক লোকো পাইলটের সঙ্গে তার ছবি রয়েছে তাতে। এসব দেখেই অফিসাররা বুঝতে পারেন এগুলি জাল। এরপর সঞ্জয়কে নিয়ে আসা হয় রানাঘাট জিআরপিতে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় ভেঙে পড়ে সে। বলে, শালিমার স্টেশনে রেলের এক লোকো পাইলটের সঙ্গে ছবিটি তোলা হয়েছিল। সে রেলের ভিজিল্যান্সের কেউ নয়।

    তদন্তে জানা গিয়েছে, সঞ্জয় প্রতিদিন সাজগোজ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে শিয়ালদহে যেত। দূরপাল্লার ট্রেনে উঠে একেক দিন একেক পরিচয়ে যাত্রীদের টিকিট ও পরিচয়পত্র পরীক্ষা করত। এমনকী, ভুয়ো জরিমানা পর্যন্ত করত।
  • Link to this news (বর্তমান)