দেশের সেরা ১০টি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় এবার কলকাতা মেডিক্যালও!
বর্তমান | ৩১ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: প্রবীণ চিকিৎসকরা এখনও প্রায়ই দুঃখ করে বলেন যে, একসময় দেশের শ্রেষ্ঠ ডাক্তারি পড়াশোনার জায়গা ছিল বাংলা। সেরা চিকিৎসক, সেরা মাস্টারমশাই, সেরা পড়াশোনার পরিবেশ—কী না ছিল এখানে! অবশেষে সেই দিন কি ফিরে আসতে চলেছে? সে-কথা অবশ্য বলবে সময়। আপাতত বাস্তবটা হল, দীর্ঘদিন পর, সম্ভবত কয়েক দশক পর দেশের অন্যতম সর্বভারতীয় র্যাঙ্কিংয়ে সেরা ১০ মেডিক্যাল কলেজের মধ্যে জায়গা করে নিল বাংলার প্রতিষ্ঠান। শতাব্দী প্রাচীন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ সম্ভব করল এই অসম্ভব। আইআইআরএফ র্যাঙ্কিংয়ে দেশের সেরা ১০ ডাক্তারি প্রতিষ্ঠানের তালিকায় নবম স্থান তথা পূর্ব ভারতে এক নম্বর ডাক্তারি প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা অর্জন করল তারা।
শেষবার ২০১৫ সালে আরও একটি সর্বভারতীয় সমীক্ষায় দেশসেরা মেডিক্যাল কলেজের তালিকায় একাদশতম স্থান অধিকার করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ। তৎকালীন আর জি কর অধ্যক্ষ ছিলেন ডাঃ শুদ্ধোদন বটব্যাল। তিনি এবারের কৃতিত্বের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজকে।
এইবারে দেখা যাক, ‘টপ এমবিবিএস মেডিক্যাল কলেজেস ইন ইন্ডিয়া ২০২৪’ বা ২০২৪ সালের দেশের ‘সেরা ১০ এমবিবিএস প্রতিষ্ঠান’ কোনগুলি? আইআইআরএফ র্যাঙ্কিং অনুযায়ী, সেগুলি হল—দিল্লি এইমস, ভেলোরের খ্রিস্টান মেডিক্যাল কলেজ (সিএমসি), পিজিআই চণ্ডীগড়, বেঙ্গালুরুর নিমহ্যানস, কর্ণাটকের ধারওয়ারের এসডিএম কলেজ অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটাল, মাদ্রাজ মেডিক্যাল কলেজ, বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির (বিএইচইউ) ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস, লখনউয়ের সঞ্জয় গান্ধী পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এসজিপিজিআই), কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং পুদুচেরির জওহরলাল ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (জিপমার)।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল—দেশসেরা এমবিবিএস প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নবম হওয়ায় কলকাতা মেডিক্যাল রীতিমতো পিছনে ফেলে দিয়েছে লখনউয়ের কিং জর্জেস মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস, কোচির অমৃতা ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, লুধিয়ানার খ্রিস্টান মেডিক্যাল কলেজ বা সিএমসি লুধিয়ানা, তিরুবনন্তপুরমের শ্রীচিত্রা তিরুনাল ইনস্টিটিউট ফর মেডিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড টেকনোলজির মতো প্রথম সারির মেডিক্যাল প্রতিষ্ঠানকেও। এই প্রসঙ্গে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, সরকারি সহযোগিতা, আমাদের শিক্ষক চিকিৎসক, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের অন্তহীন প্রচেষ্টা এবং রোগীদের ভরসাই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সম্পদ। স্বাস্থ্যদপ্তরের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় সবসময় মেডিক্যালকে ছাপিয়ে
শীর্ষে থাকে পিজি। এক্ষেত্রে পিজি কেন পূর্ব ভারতের এক নম্বর মেডিক্যাল কলেজ হতে পারল না? পিজি অধিকর্তা ডাঃ মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমরা এনআইআরএফ ছাড়া অন্য কোনও সর্বভারতীয় র্যাঙ্কিংয়ে অংশই নিই না। এবারও আইআইআরএফ অংশগ্রহণের অনুরোধ পাঠিয়েছে। চিন্তাভাবনা করে দেখি অংশ নেব কি না।