অমিল পদ্মার ইলিশ, বাজার ছেয়ে যাওয়া বার্মা ইলিশেই হবে এবারের জামাইষষ্ঠী! ...
আজকাল | ০১ জুন ২০২৫
মিল্টন সেন, হুগলি: এখনও বর্ষা ঢোকেনি বঙ্গে। প্রাক-বর্ষার বৃষ্টি বিক্ষিপ্তভাবে হয়েছে কিছু জায়গায়। তাই জালে ধরা পড়েনি রুপোলি শস্য। ফলে বাজারে ইলিশ মাছের তেমন দেখা মেলেনি। সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত তাঁর 'ইলশেগুঁড়ি' কবিতায় লিখেছেন, 'ইলশে গুঁড়ির নাচন দেখে নাচছে ইলিশ মাছ'। এখন ইলশে গুঁড়ি বৃষ্টিও নেই। ইলিশ মাছের নাচনও নেই। তাই বাজারেও নেই ইলিশ মাছ। তবে সাগরে, গঙ্গায় ইলিশ ধরা না পরলেও এখন বছরভর হিমঘরে রাখা ইলিশ পাওয়া যায় বাজারে। এবারের জামাইষষ্ঠীতে পদ্মার সেই ইলিশের চাহিদা মেটাচ্ছে প্লাস্টিকে মোরানো হিমঘরের ইলিশ।
সাধারণত পদ্মার মিষ্টি জলের ইলিশ সুস্বাদু হয়। তাই বাজারে পদ্মার ইলিশের দামও সবসময় বেশি হয়ে থাকে। তবে চলতি সময়ে বাজারে পদ্মার ইলিশের দেখা মিলছে না। পাওয়া যাচ্ছে না কোথাও। সর্বত্রই বাজার ছেয়ে রয়েছে বার্মা থেকে আমদানি করা ইলিশ মাছ। বিক্রেতারা বলছেন, অনেকেই আছেন যাঁরা ইলিশ মাছ চেনেন না। তাঁরা বার্মা ইলিশকেই পদ্মার মনে করে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
হুগলি জেলার পাইকারি মাছের বাজারগুলোর মধ্যে অন্যতম বড় বাজার হল চুঁচুড়ার চকবাজার। যেখানে প্রতিদিন কয়েক টন মাছ পাইকারি বিক্রি হয়। এদিন চকবাজারের মাছের আড়তদাররা জানিয়েছেন, জামাইষষ্ঠীর সময় ইলিশের চাহিদা থাকে অনেকটাই বেশি। পদ্মার ইলিশ মাছ আসছে না। চাহিদা অনুযায়ী যোগান না থাকায় দাম একটু চড়া হয়ে রয়েছে। এক কিলো থেকে বারোশো মাপের বার্মা ইলিশ ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরো বিক্রেতারা তার উপর আরও এক দেরশো চাপিয়ে বিক্রি করছেন। ফলে দাম অনেকটাই বেড়ে যাচ্ছে। তাই ইলিশ কিনতে গিয়ে পকেটের কথাও ভাবতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাকে। রাত পোহালেই জামাইষষ্ঠী। সেদিন ইলিশ ভাপা আর ভাজা জামাইয়ের পাতে না দিলেই নয়। তাই অনেকেই কিনছেন চড়া দামের এই রুপোলি শস্য।
এদিন চকবাজারের ইলিশ ক্রেতা প্রদীপ সরকার বলেন, তাঁর শাশুড়ি ইলিশ পছন্দ করেন। জামাইকে খাওয়াবেন। কিন্তু বাজারে সেইভাবে ইলিশ নেই। যা আছে তার দাম অনেক চড়া। মানুষ খাবে কী। আড়তদার সুখেন রায়, বিশ্বজিৎ সিংরা বলেন, ইলিশের চাহিদা আছে। কিন্তু যোগান কম। তাই দামটা একটু বেশি। এখন পদ্মার ইলিশ পাওয়া যায় না। বার্মার স্টোরের মাছ বিক্রি হচ্ছে। দাম দেড় হাজার টাকা কিলো। অনেকে বাধ্য হয়ে এই মাছই নিয়ে যাচ্ছেন। খুচরো বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এত দাম ইলিশে হাত দেওয়া যাচ্ছে না। জামাইষষ্ঠীতে মাছের যোগান কম। সবাই ইলিশমাছ খুঁজছেন। কীভাবে সামাল দেবেন বুঝতে পারছেন না।